প্রতীকী ছবি।
স্কুলে বারবার বোঝানো হচ্ছে কম বয়সে বিয়ের কুফল। তারপরেও জোর করে বান্ধবীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছে শুনে চুপ করে থাকতে পারেনি নবম শ্রেণির সঞ্চিতা, সাকিরারা। ওরাই ফোনে খবর দেয় চাইল্ড লাইন, পুলিশ, প্রশাসনকে। এমনকী, পুলিশ আসার খবরে পাত্রীকে বাড়ির লোক লুকিয়ে রাখলে পড়শিদের বাড়ি থেকে তাকে খুঁজেও বের করে ওই মেয়েরাই। শেষমেশ, বাড়ির লোক মুচলেকা দিয়ে জানিয়ে দেল ১৮-র আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না তাঁরা।
গলসি ২-এর বিডিও অপূর্বকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘কন্যাশ্রীর মেয়েরা যে তৎপরতায় কাজ করেছে তা খুবই প্রশংসনীয়।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গলসির মিরিক পাড়ার বছর চোদ্দোর ওই কিশোরীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল বর্ধমানের এক পাত্রের সঙ্গে। বৃহস্পতিবারই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। গায়ে হলুদও হয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যেই পৌঁছে যায় ওই কিশোরীর বান্ধবী তথা গলসি সারদাপীঠের ছাত্রীরা। সঙ্গে ছিলেন বিডিও, গলসি থানা ও চাইল্ড লাইনের কর্তারা। তাঁদের দাবি, আসার খবর পেয়ে মেয়েটিকে অন্য বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন পরিবারের লোকেরা। পরে বান্ধবীরাই তাকে খুঁজে বের করে।
ওই কিশোরীর পরিবারের অবশ্য দাবি, খেতমজুরি করে সংসার চলে। ভাল পাত্র পেয়ে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন তাঁরা।
দশম শ্রেণির সুস্মিতা বলে, ‘‘স্কুলে কিছুদিন আগেই কমবয়সে বিয়ে হলে শরীরে, মনে কী ক্ষতি হয় তা বোঝানো হয়েছে। তারপরেও জোর করে ওই বান্ধবীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। চুপ থাকতে পারিনি।’’
এ দিন কাটোয়ার পানুহাটেও বছর পনেরোর এক নাবালিকার বিয়ে রুখে দিলেন প্রশাসনের কর্তারা। জানা গিয়েছে, আজ শুক্রবার পানুহাট রাজমহিষীদেবী উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল স্থানীয় রক্ষা মণ্ডলের সঙ্গে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই মেয়েটির বাড়িতে হাজির হন ব্লক সমাজকল্যাণ আধিকারিক সৌম্য দাস। আধিকারিকেরা বোঝানোর পরে ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন অভিভাবকেরা। ওই ছাত্রী স্কুলে নিয়মিত যাচ্ছে কি না তা খোঁজ রাখা হবে বলে জানান চাইল্ড লাইনের কাটোয়ার কর্মকর্তা অরূপ সাহা।