বহিরাগত ছাত্রীরা কলেজের সংসদ পরিচালনা করছে— এমনই অভিযোগে টিএমসিপি পরিচালিত সংসদ কমিটি বাতিল করার দাবিতে বর্ধমানের দেওয়ানি আদালতের সিনিয়র ডিভিশনের বিচারকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মহারাজাধিরাজ উদয়চাঁদ মহিলা কলেজের ছাত্রীরা। আবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার আদালত কলেজ অধ্যক্ষের কাছে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, সাত দিনের মধ্যে জবাব না পেলে আদালত এক তরফা ভাবে শুনানি ও বিচার শুরু করবে।
কলেজ সূত্রের খবর, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এমনটা ঘটছে। অধ্যক্ষ সুকৃতী ঘোষাল বলেন, “আদালতের নির্দেশ মেনে আইনজীবীরা জবাব দেবেন। আইনের বিষয়ে আমার মন্তব্য করা অনুচিত।”
কলেজ ও তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি ওই কলেজে সংসদ নির্বাচন হয়। নির্বাচনের দিন তৃণমূল নেতারা দু’ভাগ হয়ে কলেজের সামনে রাস্তায় নেমে পড়েন। একদিকে ছিলেন বর্ধমানের পুরপিতা পরিষদের সদস্য খোকন দাসের অনুগামীরা। অন্য দিকে, প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিকের অনুগামীরা। সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে ভোটাভুটি হয়। সেখানে উজ্জ্বলবাবুর অনুগামী হিসেবে সাধারণ সম্পাদক হন মৌপিয়া রায়, সহ সভাপতি হন সোমা পাল।
১৮ জুলাই কলেজের ৩৬ জন সদস্যের মধ্যে ২৪ জন লিখিত ভাবে অধ্যক্ষকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, পরপর দু’বছর পরীক্ষায় না বসায় সাধারণ সম্পাদক ও সহ সভাপতি আর কলেজের নিয়মিত ছাত্রী নন। একই সঙ্গে ওই কমিটির বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপ-সহ একগুচ্ছ অভিযোগও জানান তাঁরা। অন্যতম অভিযোগকারী কঙ্কনা নারুর অভিযোগ, “প্রায় তিন মাস ধরে সাধারণ সম্পাদক বহিরাগত ছাত্রী। তাঁর অপসারণ চেয়ে অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়েছিলাম। উনি কোনও উচ্চবাচ্চ্য করছেন না দেখে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।”
আইনজীবী সুমন বেজ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই পদাধিকারীরা কলেজের নিয়মিত ছাত্রী নন। আর নিয়মিত ছাত্রী না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংসদ তৈরির নিয়মে পদাধিকারীও থাকতে পারবেন না।”
সাধারণ সম্পাদক মৌপিয়া রায়ের যদিও দাবি, “আমি এ বছর স্নাতক স্তরে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিলাম। সব ফালতু অভিযোগ!” তছরূপের অভিযোগ মানতে চাননি অধ্যক্ষ তথা সংসদের সভাপতি সুকৃতি ঘোষাল। তিনি বলেন, “ওই অভিযোগ নিয়ে পরিচালন সমিতিতে আলোচনা হয়েছে। সেখানকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”