ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন প্রধান শিক্ষক। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র।
কারও ব্যাগ নেই। কারও আবার স্কুলের ইউনিফর্ম নেই। তাই স্কুলে যাওয়া হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের নেপালিপাড়া হিন্দি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কলিমুল হককে হাতের কাছে পেয়ে এমনই দাবি করলেন অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশ।
সম্প্রতি জেলা শিক্ষা দফতর জানিয়েছিল, স্কুল খোলার পরে এক সপ্তাহ পর্যন্ত পড়ুয়াদের উপস্থিতি ৩৬ শতাংশের আশপাশে। এই পরিস্থিতিতে কেন অনুপস্থিতি, তা জানতে শিক্ষা দফতরের কর্তারা পড়ুয়াদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কারণ অনুসন্ধান করছেন। বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষও অনুপস্থিত পড়ুয়া ও তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এই সূত্রেই দুর্গাপুরের স্কুলটিতেও শুরু হয়েছে অনুরূপ কর্মসূচি। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকের তুলনায় স্কুলে উপস্থিতির সংখ্যা বেড়েছে। তবু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬২ শতাংশের বেশি তা হয়নি। এ দিন ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের অনুপস্থিত পড়ুয়াদের তালিকা তৈরি করে ওই এলাকায় তিন-চার জন পড়ুয়াকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক কলিমুল হক বৃহস্পতিবার প্রায় ২৫ জন গরহাজির পড়ুয়াদের বাড়ি-বাড়ি যান। করঙ্গপাড়া, সিনেমা হল রোড-সহ আশপাশের এলাকায় এ দিন গিয়েছিলেন কলিমুল। ধাপে-ধাপে সব জায়গায় গিয়ে গিয়ে তিনি পড়ুয়াদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার অভিযান চালাবেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষকের কাছে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রজনী সাউ বলে, “ব্যাগ নেই, তাই স্কুল যাইনি এত দিন।” একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রিঙ্কি কুমারি মাহাতো বলে, “আমার স্কুলের ইউনিফর্ম নেই। তাই যেতে পারিনি স্কুলে। স্যর বলেছেন, ব্যবস্থা করবেন।” পাশাপাশি, অভিভাবক পুণমদেবী জানান, সামনে পরীক্ষা থাকায় ছেলে স্কুলে যাচ্ছে না। তবে প্রধান শিক্ষক বাড়িতে এসেছিলেন। এ বার ছেলে স্কুলে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক তিমিরবরণ জানা বলেন, “সর্বশিক্ষা মিশন থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের স্কুল ব্যাগ এবং ইউনিফর্ম দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। দুর্গাপুর-সহ অন্যত্র উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের ব্যাগ ও ইউনিফর্ম নিয়ে সমস্যা হচ্ছে কি না, তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।” এ দিন বাড়ি-বাড়ি ঘোরা শেষে প্রধান শিক্ষক কলিমুল বলেন, “আমি ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে বলেছি। কী ভাবে পোশাক, জুতো বা ব্যাগের সমস্যা মেটানো যায়, তা অবশ্যই দেখা হবে।”