পড়ার জেদই সম্বল প্রসেনজিতের

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০৪:২৯
Share:

প্রসেনজিৎ প্রামাণিক।—নিজস্ব চিত্র।

এক চিলতে ঘরে মাথার উপর ছোট্ট একটা টিনের ছাউনি। কাকভোরে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে যান বাবা। মা পেশায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা। বাড়িতে অভাব নিত্যসঙ্গী। কিন্তু সে সব পূর্বস্থলীর প্রসেনজিৎ প্রামাণিকের পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। অদ্যম জেদকে সঙ্গী করে এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকে তার সংগ্রহ ৯০ শতাংশেরও বেশি। ইচ্ছে ভবিষ্যতে পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার।

Advertisement

নসরতপুর পঞ্চায়েতের গা ঘেঁষে এক কামরার ছোট্ট বাড়িতে বাবা-মা আর ভায়ের সঙ্গে বাস প্রসেনজিতের। ভাই শুভজিৎ এখন নবম শ্রেণির পড়ুয়া। পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রসেনজিতের বাবা নারায়ণবাবু বছরভর কাকভোর রিকশা আর খাবারের একটা পুঁটলি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। ফেরেন সেই গভীর রাতে। নারায়ণবাবুর দাবি, ‘‘খুব ভাল রোজগার হলেও দিনে দেড়শো টাকার বেশি পকেটে আসে না।’’

প্রসেনজিতের মা তাপসীদেবী জানান, ছেলেকে ভাল জামা-কাপড় তো দূর। ভাল করে খাবারটুকুও দিতে পারেননি। নতুন ক্লাসে উঠে কোনও দিন নতুন বইপত্রও হাতে আসেনি বলে জানায় প্রসেনজিৎ। তবে দারিদ্র পারুলডাঙা নসরতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়া প্রসেনজিতকে আটকাতে পারেনি। উঁচু ক্লাসের দাদাদের থেকে বইপত্র চেয়েচিন্তেই পড়াশোনা চালিয়েছে বলে জানায় সে। তবে স্কুলের শিক্ষকরাও সাহায্য করেছেন সাধ্যমতো। প্রসেনজিতের ইচ্ছে এ বার পদার্থবিজ্ঞানে নিয়ে পড়াশোনা করে গবেষণা করার। তবে ছেলের সেই স্বপ্ন কী ভাবে পূরণ হবে, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না নারায়ণবাবু ও তাঁর পরিবার। তাঁর কথায়, ‘‘এতদিন ভীষণ কষ্ট করে ছেলের পড়াশোনাটা চালিয়েছি। এ বার কী যে হবে!’’

Advertisement

তবে প্রসেনজিতের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘প্রসেনজিৎকে চিনি। অত্যন্ত মেধাবী ও।’’ পড়াশোনা চালাতে গিয়ে আপাতত হয়তো এই আশ্বাসে ভর করেই প্রসেনজিৎ বলে ফেলে, ‘‘পড়া ছাড়ছি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement