বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের শ্রমিক-কর্মীদের আন্দোলনে পাশে থাকবে রাজ্য, জানালেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। কারখানা দেউলিয়া ঘোষণার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শনিবার বার্নপুরে ওই কারখানায় শ্রমিক সম্মেলনের আয়োজন হয়। ‘বার্ন স্ট্যান্ডার্ড সেভ কমিটি’র ডাকে ওই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল ছ’টি শ্রমিক সংগঠন। সেখানেই রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক মলয়বাবু জানান, বিধায়সভায় তাঁরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বিষয়টি সংসদ অধিবেশনেও তোলার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
কেন্দ্রের ভারী শিল্প মন্ত্রক দেউলিয়া বিধি মেনে গত ২৪ মে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানাকে ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইবুনালে পাঠিয়েছে। কারখানার সব ক’টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, কেন্দ্র কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। শনিবার আয়োজিত সম্মেলনেও ফের এই অভিযোগ তুলে শ্রমিক নেতারা টানা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। মলয়বাবু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই কারখানা অধিগ্রহণ করেছিলেন। তা কোনও ভাবেই বন্ধ হতে দেওয়া যাবে না।’’ তিনি শ্রমিক-কর্মীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
আইএনটিইউসি নেতা হরজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘এই সংস্থায় মাসে গড়ে ১১০টি ওয়াগন তৈরি হয়। এই অবস্থায় কারখানা বন্ধের চক্রান্ত আমরা রুখব।’’ সিটুর জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ চক্রবর্তী জানান, শ্রমিক-কর্মীদের লাগাতার আন্দোলনের ফলে রেল এই কারখানা অধিগ্রহণ করেছে। তা এ ভাবে বন্ধের চক্রান্ত যে কোনও মূল্যে রোখার ডাক দেন তিনি। আইএনটিটিইউসি নেতা অভিজিৎ ঘটকের দাবি, রাজ্যের তরফে এ বিষয়ে ইতিমধ্যে কথা শুরু হয়েছে। সম্মেলনে ছিলেন বার্ন স্ট্যান্ডার্ড সেভ কমিটির আহ্বায়ক তথা বিএমএস নেতা অনিল সিংহ, এইএমএস নেতা আশিস বাগ।
কারখানায় এখন ২৯১ জন স্থায়ী শ্রমিক-কর্মী ও ১৬৫ জন অস্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের দাবি, এত অল্প কর্মী দিয়েও মাসে ১১০টি ওয়াগন তৈরি করা হচ্ছে। সংস্থার এক আধিকারিক জানান, যন্ত্রপাতি ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় সংস্থার প্রায় হাজার কোটি টাকার ভূসম্পত্তি রয়েছে। তার পরেও সংস্থাকে দেউলিয়া ঘোষণার সিদ্ধান্ত চক্রান্ত বলেই তাঁদের অভিযোগ। কর্মী-আধিকারিকদের একাংশের আরও অভিযোগ, বছর আটেক আগেই ভারী শিল্প মন্ত্রক এই কারখানা বন্ধের প্রসঙ্গ তুলেছিল। তৎকালিন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কারখানা বাঁচাতে আসরে নামেন। ২০১০ সালের ১১ জুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানাকে রেলের অধিগৃহীত সংস্থায় রূপান্তর করে। রেলের বেতন কাঠামো ও অন্য সুযোগ-সুবিধা না পেলেও সুদিনের আসায় কাজ করছিলেন শ্রমিক-কর্মীরা। কিন্তু কারখানার ভবিষ্যৎ ফের অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা।