‘কৃষকবন্ধু’তে নেই জেলার অর্ধেক চাষি, প্রশ্ন কমিটির

বৃহস্পতিবার বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার (বিডিএ) দফতরে একটি বৈঠকে কৃষি ও উদ্যানপালন দফতরে কর্মী সংখ্যা কম রয়েছে বলে স্ট্যান্ডিং কমিটিকে জানান সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

উৎপাদিত ফসল রাজ্যের বাইরেও বিক্রি করার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিল রাজ্য বিধানসভার কৃষি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি। ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন ওই কমিটির সদস্যেরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার (বিডিএ) দফতরে একটি বৈঠকে কৃষি ও উদ্যানপালন দফতরে কর্মী সংখ্যা কম রয়েছে বলে স্ট্যান্ডিং কমিটিকে জানান সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা। কৃষি সংক্রান্ত একাধিক প্রকল্প নিয়েও ঘণ্টাখানেক ধরে আলোচনা হয়। কমিটিতে রয়েছেন জেলার বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল, নিশীথ মালিকেরাও।

বুধবার ওই কমিটির একটি প্রতিনিধিরা কালনাতেও গিয়েছিলেন। সেখানে কৃষক বাজার, তাঁতের হাট-সহ বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে দেখেন তাঁরা। বেগপুর কৃষি সমবায়েও যান। সেখানের চাষিদের দাবিদাওয়া শোনার পরে উদ্যানপালন দফতরের উদ্যোগে তৈরি স্কুলের পুষ্টিবাগান ঘুরে দেখেন তাঁরা। এ দিনও গলসির বিভিন্ন এলাকা দিয়ে শুরু হয় ওই প্রতিনিধি দলের পরিদর্শন। কমিটির চেয়ারপার্সন ফিরোজা বেগমের নেতৃত্বে গলসির দুই গ্রামের সেচ ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন তাঁরা। গলসি ব্লক কৃষি দফতরের দাবি, চান্না ও সামড়া গ্রামে সেচ এলাকা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘গুচ্ছ কৃষি বিদ্যুৎ সংযোগ’ প্রকল্পে দুই মৌজায় ৪৭টি পাম্পে সেটে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তাতে সেচ এলাকা বেড়েছে প্রায় ৩৩০ হেক্টর। এ দিন সেই প্রকল্প ঘুরে দেখেন প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। উদ্যোগের প্রশংসাও করেন। সেখান থেকেই পৌঁছে যান বর্ধমানের বৈঠকে।

Advertisement

ফিরোজা বেগম বলেন, “বৈঠকে মূলত উদ্যানপালন বিভাগ কী কী কাজ করেছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। লেমন গ্রাস, ড্রাগন ফল, স্ট্রবেরির মতো উৎপাদিত দ্রব্য কী ভাবে দেশের বাজারে বিক্রি করা যায় সে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।’’ জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, কৃষি বিপণন, কৃষি দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্যানপালন বিভাগকে তাদের উৎপাদিত দ্রব্য বাজারজাত করার পরিকল্পনা নিতে বলা হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, উদ্যানপালন দফতর জেলায় প্রায় আট হেক্টর জমিতে ফল, ৫০ হেক্টর জমিতে আনাজ ও তিন হেক্টরের বেশি জমিতে মশলাজাতীয় গাছ লাগিয়েছে। ১০০ দিনের প্রকল্পের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গলসি ১, রায়না ২ ও আউশগ্রাম ২ ব্লকের কৃষক বাজারে ‘লেমন গ্রাস’ চাষ করারও পরিকল্পনাও হয়েছে। মোট ১২ একর জমিতে চাষ করা হবে। ওই দফতরের জেলার অধিকর্তা কৃষ্ণেন্দু ঘড়াই বলেন, “প্রতি একরে ১৫ কিলোগ্রাম তেল উৎপাদন হবে। যন্ত্রও বাসানো হবে। আশা করছি, পুজোর আগেই ‘লেমন গ্রাস’ চাষ শুরু হবে। আগামী বছর থেকে তেল উৎপাদন করতে পারব।’’ বিদেশের বাজারে এর ভাল চাহিদা রয়েছে, তাঁর দাবি।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, এ জেলার ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭৫৯ চাষির মধ্যে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের আওতায় এসেছেন ২ লক্ষ ৪২ হাজার ২২১ জন। এখনও অর্ধেক চাষি কেন এর আওতায় নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কমিটির সদস্যেরা। জেলায় কৃষি পেনশন প্রাপকদের সংখ্যা কম কেন, সে প্রশ্নও ওঠে। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হন। মুখ্যমন্ত্রী কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছেন। শস্যবিমার উপর জোর দিচ্ছেন। এখন সেচ ব্যবস্থার উন্নতির জন্যে বড় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।’’

স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপার্সন ফিরোজা বেগম বলেন, “চাষিদের সমস্যা থেকে জেলা প্রশাসনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে কৃষিমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement