প্রায় ফাঁকা ২ নম্বর জাতীয় সড়ক। দুর্গাপুরের মুচিপাড়ায় বৃহস্পতিবার। ছবি: বিকাশ মশান
রাজ্যে বৃহস্পতিবারের ‘লকডাউন’ জেলায় পুরোপুরি সফল বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। বিশেষ ভাবে কড়াকড়ি দেখা গিয়েছে, ভিন্-জেলা ও ভিন্-রাজ্যের সঙ্গে সীমানায়।
সীমানা: কুলটির ডুবুরডিহি এবং সালানপুরে রূপনারাণপুরে ঝাড়খণ্ড সীমানায় তিনটি ‘চেক পোস্ট’-এই সকাল থেকে দেখা যায়, কড়া পুলিশি নজরদারি। ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা সমস্ত গাড়িকে পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রবেশের অনুমতিপত্র যাঁরা দেখাতে পারেননি, তাঁদের রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি, ডিসেরগড় হয়ে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় যাতায়াত করা যায়। সেখানেও সুভাষ সেতুর দু’পাশে সক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছে তিন জেলার পুলিশকেই। একই ভাবে বীরভূম সীমানায় ইলামবাজারে অজয় সেতু ও বাঁকুড়া সীমানায় দামোদরের ব্যারাজের উপরেও বিশেষ নজর রাখা হয়েছিল।
দোকান-বাজার: বুধবার মহকুমা প্রশাসনের নির্দেশিকা অমান্য করে দুপুর ১টার পরে দোকান-বাজার খোলা থাকতে দেখা গিয়েছিল আসানসোলে। এ দিন অবশ্য আসানসোল বাজার-সহ জেলার নানা বাজারে শাটার তোলেননি ব্যবসায়ীরা। জনশূন্য ছিল দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজার, দুর্গাপুর স্টেশন বাজার, মুচিপাড়া বাজার। যদিও এ দিন নিউরোড থেকে লছিপুরের নানা জায়গায় আনাজ, মাছ-মাংস, চা-তেলেভাজার দোকান খুলেছিল। অপ্রয়োজনে রাস্তার জটলাও দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশের টহলদার গাড়ি চোখের আড়াল হলেই বাসিন্দাদের একাংশ পথে নেমেছেন বলে অভিযোগ এই সব এলাকায়।
ধরপাকড়: কোকআভেন থানা সূত্রে জানা যায়, স্টেশন বাজারের একটি দোকানের সামনে নির্মাণকাজ চালানোর অভিযোগে কয়েকজন নির্মাণকর্মীকে আটক করা হয়। সিনেমা হল রোডে ‘মাস্ক’ না পরে রাস্তায় বেরনোয় গ্রেফতার করা হয় কয়েকজনকে। কাঁকসা থানা সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগে এখানে এ দিন প্রায় ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। লকডাউন অমান্য করা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগে দুর্গাপুরের তিনটি থানা, কাঁকসা, বুদবুদ, ফরিদপুর (লাউদোহা), অণ্ডাল ও পাণ্ডবেশ্বর থানা এলাকা থেকে প্রায় একশো জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘লকডাউন অমান্য করা বা স্বাস্থ্যবিধি না মানার ঘটনা দেখলেই পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিধিভঙ্গের জন্য আসানসোল মহকুমায় ১৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দিনের শেষে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘লকডাউন পুরোপুরি সফল। পুলিশ-প্রশাসন পথে ছিল। আগামী দিনেও এমনটাই হবে। করোনাকে রুখতে স্বাস্থ্য-বিধি মানতে হবে সবাইকেই।’’