Andal

বাসের মাথায় কয়লার বস্তা, তরজা অন্ডালে

ওই বাসের ছাদে প্রায় প্রতিদিন কয়লা নিয়ে যাওয়া হয় বলে শুনেছি। এই বাস অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্যের দাবি, জামুড়িয়ার সাতগ্রাম, বেনালি এলাকায় প্রতিদিন এই বাসে কয়লা চাপিয়ে পাচার করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অন্ডাল শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:২৩
Share:

এই বাস থেকে উদ্ধার হয় কয়লা ভর্তি বস্তাগুলি। নিজস্ব চিত্র

দুধ ও খাদ্যসামগ্রীর কন্টেনারে কয়লা পাচারের অভিযোগ উঠেছিল জামুড়িয়ায়। এ বার বাসের ছাদ থেকে উদ্ধার হল কয়লা। ঘটনাস্থল অবশ্য অন্ডাল। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার অন্ডাল গ্রাম মোড়ে নাকা-তল্লাশি চলছিল। সকাল ১১টা নাগাদ আসানসোল থেকে বর্ধমানগামী একটি বড় বাসের (সুপার এক্সপ্রেস) ছাদে প্রচুর বস্তা দেখে সেটি দাঁড় করানো হয়। পুলিশকর্মীরা দেখেন, সব বস্তায় কয়লা ভর্তি। সেগুলি নীচে নামিয়ে বাসটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, যাত্রীদের কথা ভেবে বাসটি আটকানো হয়নি। তবে চালকের নাম ও ফোন নম্বর নেওয়া হয়েছে। ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত জানান, প্রায় দু’টন কয়লা উদ্ধার হয়েছে। কোথা থেকে কয়লা নিয়ে আসা হচ্ছিল এবং তা কোথায় পাচার করা হচ্ছিল, এর সঙ্গে কারা জড়িত— তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

এ দিকে, এই কয়লা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে বাস সংগঠনের পাশাপাশি, শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। আসানসোল বাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মুখোপাধ্যায় জানান, এই বাসের মালিক বর্ধমান বাস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। বিজনের অভিযোগ, এক মাত্র ওই বাসের ছাদে প্রায় প্রতিদিন কয়লা নিয়ে যাওয়া হয় বলে শুনেছি। এই বাস অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্যের দাবি, জামুড়িয়ার সাতগ্রাম, বেনালি এলাকায় প্রতিদিন এই বাসে কয়লা চাপিয়ে পাচার করা হয়। তা স্থানীয় বাসিন্দারা জানেন। বিজন বলেন, “প্রশাসনের উচিত দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করা।” বর্ধমান বাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জানকী সিংহ জানান, কে বা কারা বাসের ছাদে কয়লা চাপিয়ে পাচার করছে, পুলিশি তদন্তে জানা যাবে। তাঁর দাবি, দুষ্কৃতীরা জোর করে বাসের ছাদে কয়লা চাপিয়ে পাচার করতে চাইলে, নিরীহ পরিবহণকর্মীদের কিছু করার থাকে না। কারণ, তাঁদের থেকে দুষ্কৃতীরা অনেক বেশি প্রভাবশালী। ওই বাসের মালিক প্রয়াত কৃষ্ণলাল শর্মার ছেলে অমিতের দাবি, “বাবা মারা যাওয়ার পরে আমি এখনও বাসের মালিকানা পাইনি। বাবার মৃত্যুর আগে থেকেই বাসের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন পার্থ রায় নামে এক ব্যক্তি। তিনিই বাসের দেখাশোনা করেন। কাজেই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।” পার্থের দাবি, বাসের ছাদে কয়লা পাচার সম্পর্কে তাঁর কিছু জানা নেই। তিনি জানান, যা মন্তব্য করার চালক, কন্ডাক্টর, খালাসির সঙ্গে কথা বলার পরে করবেন।

সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়, বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, “দুধ ও ফলের কন্টেনারের পরে, এ বার বাসের ছাদ থেকে কয়লা উদ্ধার হল। এর থেকেই পরিষ্কার, জেলায় রাজ্যের শাসকগোষ্ঠীর মদতে চলতে থাকা অবৈধ কয়লার রমরমা কারবারে লাগাম টানা যাচ্ছে না।” তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন জানান, প্রশাসন অবৈধ কারবার চলতে দেবে না। নিয়মিত অভিযান চলছে বলেই এই সাফল্য মিলছে। বিরোধীদের তা বোঝা উচিত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement