—ফাইল চিত্র।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটে এই জেলার সব বিধানসভা কেন্দ্রেই পদ্ম ফুটেছে। তার পরেও সম্প্রতি জেলার নানা প্রান্তে বিভিন্ন ঘটনায় প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের ‘কোন্দল’। প্রতি ক্ষেত্রেই দলীয় নেতৃত্ব তা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু তার পরে আজ, রানিগঞ্জের কর্মসূচি থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের জেলা নেতৃত্বের প্রতি কিছু বার্তা দেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে।
ঘটনাচক্রে, সাম্প্রতিক সময়ে আগামী নির্বাচনে আসানসোল উত্তর কেন্দ্রে বর্তমান বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ঘটকের বদলে ‘সংখ্যালঘু’ প্রার্থীর জন্য সওয়াল করেন পুরসভার বিদায়ী তিন তৃণমূল কাউন্সিলর। পরে আবার দলের সংখ্যালঘু সেল এই দাবির বিরোধিতা করে। এই টানাপড়েনকে এলাকার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মলয়বাবু এবং দলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি অনুগামীদের ‘বিরোধ’ হিসেবেই দেখছিলেন। যদিও কেউই তা
স্বীকার করেননি।
পাশাপাশি, জিতেন্দ্রবাবুর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র পাণ্ডবেশ্বরে, দলের অন্দরে তাঁর অনুগামী বলে পরিচিতদের সঙ্গে দলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন চক্রবর্তীর অনুগামীদের মারামারি বাধে বলে তৃণমূল সূত্রেই জানা যায়। এ দিকে, দুর্গাপুরের সগড়ভাঙায় বেসরকারি গ্রাফাইট কারখানায় কর্মী-নিয়োগকে কেন্দ্র করেও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিরোধ প্রকাশ্যে আসে বলে মত তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশের। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক এই তিনটি ঘটনা ছাড়াও, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া ও কুলটিতেও নানা বিষয় নিয়ে নেতৃত্বের ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে চলে আসছে। সেই সঙ্গে দুর্গাপুরে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে ‘দাদার অনুগামী’-দের পোস্টার, ব্যানার।
এমন এক রাজনৈতিক আবহে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর জেলা সফর তাই অত্যন্ত ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করছেন দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের মতে, কোন্দল মেটাতে এক জোট হয়ে লড়ার বার্তাই দেবেন নেত্রী। দলের নেতা নরেন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জেলায় কিছু নেতা দলের ক্ষতি করছেন। আশা করি, নেত্রী তাঁদের সতর্কবার্তা শুনিয়ে দলকে আরও বেশি ভোটমুখী করে তুলবেন।’’ দলের কোঅর্ডিনেটর তথা আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালও বলেন, ‘‘কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ার বার্তাই দেবেন নেত্রী, এই আশা করি।’’ তবে নেত্রীর বার্তা প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি জানান, নেত্রীর উপস্থিতিই তাঁদের মনোবল বাড়িয়ে দেবে। মন্ত্রী মলয়বাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার দিকে আমরা সবাই তাকিয়ে আছি।’’