খয়রাসোলের এই শ্মশান ঘিরে চাপানউতোর। নিজস্ব চিত্র।
উপলক্ষ, শ্মশান সংস্কার। আর তাকে কেন্দ্র করেই পুরনো অভিযোগে শাণ দিতে শুরু করল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সাংসদ বিজেপির হওয়ায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাংসদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অর্থে, দুর্গাপুরে উন্নয়নমূলক কাজ করতে দেয়নি তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি, পাঁচ বছর সাড়াশব্দ না করে, এখন লোকসভা ভোটের আগে হাওয়া গরম করতে চাইছে বিজেপি।
পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের খয়রাসোলে থাকা একটি প্রাচীন শ্মশান আগাছার জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। খয়রাসোলের বাসিন্দা নিরঞ্জন শ্যাম বলেন, “শ্মশানে দেহ দাহ করা যাচ্ছে না। সবাইকে বীরভানপুর যেতে হচ্ছে। গরিব মানুষের সমস্যা হচ্ছে। গাড়ি ভাড়া করে যেতে হয়। দ্রুত শ্মশানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হোক।” এলাকাবাসীর অভিযোগ, বীরভানপুর শ্মশানে মাঝে মাঝেই দু’টি বৈদ্যুতিন চুল্লির একটি বিকল হয়ে যায়। কখনও-কখনও আবার দু’টি চুল্লি বিকল হওয়ার ঘটনাও ঘটে। ফলে, দেহ নিয়ে গিয়ে দাহ করার জন্য লাইনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়য়। তা ছাড়া দূরত্বের সমস্যা আছে।
স্থানীয় যুবক শোভন কেশের বক্তব্য, “আমরা কয়েক বছর আগে বেহাল শ্মশান সংস্কারের আর্জি জানিয়েছিলাম বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার কাছে। তিনি ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে সাংসদ তহবিল থেকে শ্মশান সংস্কারের জন্য ৩ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা বরাদ্দ করেন। কিন্তু সেই কাজ আজও হয়নি।”
সূত্রের খবর, ওই শ্মশানটি ছাড়াও, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেহাল নমো সগরভাঙা শ্মশানের জন্য প্রায় ৫ লক্ষ ১৩ হাজার এবং সগড়ভাঙা শ্মশানের জন্য ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ করেছিলেন সাংসদ। এই অর্থে শ্মশানে ছাউনি, বিশ্রামকক্ষ, শৌচাগার, পানীয় জলের সংযোগের ব্যবস্থা করার কথা ছিল। কিন্তু একটি কাজও হয়নি। শুক্রবার খয়রাসোল শ্মশানে গিয়ে গ্রামের কয়েক জন বাসিন্দা শ্মশান সংস্কারের বিষয়ে সরব হন।
এই পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির অভিযোগ, শুধু সাংসদ নন, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের ক্ষেত্রেও এমনই ঘটেছে। তিনিও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেও কাজ করাতে পারেননি। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা কাজ আটকে রেখেছে। বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত বলেন, “দুর্গাপুর পুরসভায় গত ১০ বছর ধরে ‘অডিট’ হয়নি। আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে পুরসভা। সাংসদ ওই শ্মশান-সহ শহরের বহু প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছেন। আমাদের সাংসদ, বিধায়ককে মানুষের চোখে হেও করার জন্য একটি কাজও পুরসভা করেনি। কিন্তু মানুষ সব বোঝেন।”
অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সামনে লোকসভা নির্বাচন। তাই পাঁচ বছর পরে বিজেপির খেয়াল হল যে প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে। তবে অযথা বাজার গরম করে লাভ নেই।”