শব্দ-তাণ্ডবে না, খুশি প্রশাসনের কর্তারাও

দুর্গাপুর ব্যারাজ, নাচন ড্যাম, তিলাবনির জঙ্গল, মাইথনে ফি বছরের মতো এ বারেও ‘পিকনিক পার্টি’র ভিড় ছিল নজরকাড়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৩
Share:

আনন্দে: পিকনিক চললেও নেই সাউন্ড-বক্স। নিজস্ব চিত্র

অন্যান্য বছরের তুলনায় এ যেন উল্টো ছবি। বড়দিনের ছুটির মেজাজে দেদার চলছে পিকনিক। চলছে খাওয়া-দাওয়া, নাচ-গান, সবই। কিন্তু প্রায় কোথাও শব্দ-যন্ত্রণা নেই। সোমবার শিল্পাঞ্চলের নানা এলাকা ঘুরে এমনই ছবি দেখা গিয়েছে। প্রশাসনের কর্তাদের মতে, তাঁদের কড়া নজরদারি এবং মানুষের সচেতনতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।

Advertisement

দুর্গাপুর ব্যারাজ, নাচন ড্যাম, তিলাবনির জঙ্গল, মাইথনে ফি বছরের মতো এ বারেও ‘পিকনিক পার্টি’র ভিড় ছিল নজরকাড়া। তাঁদের মধ্যে কেউ দুর্গাপুর থেকে এসেছেন, কেউ বা আসানসোল, রানিগঞ্জ-সহ জেলার নানা প্রান্ত থেকে। কিন্তু এক জায়গাতে সবারই মিল। চড়া শব্দে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে কান ঝালাপালা করার ব্যবস্থা নেই।

অথচ প্রশাসনের নানা কর্তাদের অভিজ্ঞতা, অন্যান্য বার দেখা যায়, ২৫-৩০ ফুট অন্তর সাউন্ড বক্স বাজছে। সে শব্দব্রহ্ম এমনই যে, কানে তালা ধরত অনেকেরই। কিন্তু এ বার দেখা গিয়েছে সাউন্ড বক্স নয়, বরং মোবাইলে গান চালিয়ে তার তালে পা মেলাচ্ছেন লোক জন। এমন ‘পরিবর্তন’-এ খুশি এলাকাবাসীও। দুর্গাপুরের বি-জোন থেকে ব্যারাজে পিকনিক করতে এসেছিলেন সুমন্ত সরকার। তিনি বলেন, ‘‘ফি বছরই আসি। এ বার কোনও শব্দ-তাণ্ডব নেই। খুব ভাল লাগছে। এটাই হওয়া দরকার।’’ তবে ব্যারাজ এলাকায় দু-এক জন সাউন্ড-বক্স নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের অনুরোধে তা আর ব্যবহার করেননি তাঁরা।

Advertisement

যদিও এই ‘পরিবর্তন’-এর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম দেউল পার্ক এবং তার লাগোয়া অজয়ের পা়ড়। সেখানে সাউন্ড বক্সের তাণ্ডব ভালমতোই চলেছে। অথচ এর দু’শো মিটার এলাকার মধ্যে রয়েছে হরিণ ও ময়ূর সংরক্ষণের জায়গা। অতিরিক্ত শব্দ প্রাণীজগতের পক্ষেও ক্ষতিকারক বলে জানান বন দফতরের এক কর্মী। তাঁর দাবি, পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। পূর্ব বর্ধমানের গলসি থেকে পিকনিক করতে আসা মহেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘এ সব বন্ধ হওয়া উচিত।’’ যদিও পুলিশের দাবি, অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

কিন্তু একটি ব্যতিক্রম বাদে সর্বত্র অন্য ছবি কেন? বন দফতর জানায়, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ডিজে বক্সের চড়া শব্দের তরঙ্গে পাখিদের চরম ক্ষতি হয়। সমস্যা হয় তাদের বংশবিস্তারেও। তাই পিকনিকের মরসুম শুরুর আগেভাগেই শব্দ-তাণ্ডব বন্ধে সক্রিয় হয় বন দফতর, পুলিশ, প্রশাসন, জীববৈচিত্র রক্ষার সঙ্গে যুক্ত নানা সংস্থা, নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা। দুর্গাপুরের ডিএফও মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘সম্ভবত এ বারেই প্রথম এমন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হল। সবাই সচেতন হলে আমাদের ভবিষ্যতও ভাল থাকবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement