এ ভাবেই কাজ। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে গেলে আপাতত একমাত্র অস্ত্র দূরত্ববিধি মেনে চলা। কিন্তু একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে তা না মানার অভিযোগ উঠেছে কাটোয়ার জাজিগ্রামে।
শুক্রবার বর্ধমান-কাটোয়া রোডের ধারে ওই গ্রামে গোয়াই পঞ্চায়েতের তরফ থেকে একশো দিনের প্রকল্পে সেচখাল সংস্কারের কাজ চলছিল। বড়সড় সেচখালটি সংস্কারের কাজে দুই সংসদের প্রায় হাজার খানেক পুরুষ-মহিলা কাজ করছিলেন। কিন্তু দিনভর গা ঘেঁষাঘেঁষি করে কাজ করার পরেও, তাঁদের বেশির ভাগেরই মুখে ‘মাস্ক’ ছিল না বলে অভিযোগ। ছিল না হাত ধোয়ার সাবানজল বা ‘স্যানিটাইজ়ার’। যদিও পঞ্চায়েতের দাবি, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই কাজ করতে বলা হয়েছে।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া ১ ব্লকের গোয়াই পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার জমি ওই সেচখালের উপরে নির্ভরশীল। তবে দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায়, খালটি মজে গিয়েছে। ফলে, বহু দিন ধরেই খালটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছিলেন চাষিরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ জাজিগ্রামে এক সঙ্গে প্রচুর শ্রমিক জমায়েত করেন। কার্যত গাদাগাদি করে খালটি সংস্কার করা শুরু হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাজিগ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার দাবি, অর্থনীতিকে সচল করতে ধাপে ধাপে ‘লকডাউন’ শিথিল করা হচ্ছে। এই সময়েই প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা-আক্রান্ত ও সে রোগে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ, পঞ্চায়েতের তরফ থেকে যে ভাবে এক সঙ্গে প্রচুর শ্রমিককে কাজে লাগানো হয়েছে তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। তাঁরা জানান, শ্রমিকেরা কেউ গামছা, কেউ শাড়ির আঁচল মুখে দিয়ে কাজ করছিলেন। তা-ও সব সময়ে ছিল না।
যদিও গোয়াই পঞ্চায়েতের প্রধান সুধীর চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আমরা একশো দিনের প্রকল্পে সেচখাল সংস্কারের কাজে দু’টি সংসদ মিলে হাজারখানেক শ্রমিককে নিয়োগ করেছি। প্রত্যেককেই কড়া ভাবে বলে দেওয়া হয়েছিল যে সমস্ত বিধি মেনে, দূরত্ব রেখে কাজ করতে হবে। গা ঘেঁষে কাজ করা হলে তা ঠিক করেনি। সুপারভাইজ়ারের সঙ্গে কথা বলব।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করা আবশ্যক। নিয়ম কোনওমতেই হালকা ভাবে নেওয়া যাবে না।’’