পথে: দুর্গাপুরের জয়দেব অ্যাভিনিউয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
শহরের আকাশে রঙিন ফানুসের দাপট এ বার পুজোর মরসুমে বেশি করে চোখে পড়েছে দুর্গাপুরে। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পরেই হাওয়ায় বেসামাল ফানুস কখনও আছড়ে পড়েছে রাস্তায়, কখনও বা অল্পের জন্য আগুনের হাত থেকে বেঁচেছেন পথচারীরা। কখনও বা ফানুস গিয়ে পড়েছে সোজা বাড়ির ছাদে। গত কয়েক দিন এমনই ফানুস-যন্ত্রণা দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ শহরবাসীর।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা। রাঁচি কলোনির কাছে এনআইটি-র কাছাকাছি জায়গায় সজোরে ব্রেক কষলেন মোটরবাইক আরোহী শিবরাম বসু। কারণ, পাশ দিয়ে উড়ে অদূরেই পড়ল একটি জ্বলন্ত ফানুস। শিবরামবাবুর কথায়, ‘‘আর একটু হলেই তো গায়ে পড়ত!’’
একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে সুরভি কোঙারের। গাড়ি চালিয়ে স্টেশন থেকে সিটি সেন্টার আসছিলেন তিনি। নন-কোম্পানির বাসিন্দা সুরভি বলেন, ‘‘রাত প্রায় ১১টা। রাস্তায় লোক জন নেই। হঠাৎ গাড়ির সামনে ফানুস দেখে চমকে গিয়েছিলাম।’’ বেনাচিতির শ্যামাশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় আবার জানান, রাত ১০টা নাগাদ ফানুসের কিছু অংশ এসে পড়ে বাড়ির ছাদে। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘আগুনও তো ধরতে পারত।’’
দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারের বিক্রেতারা জানান, গড়ে ২৫ টাকা দরে ফানুস বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের বেশ কদরও পেয়েছে রকমারি ফানুস। কিন্তু ফানুসে এমন বিপত্তি ঘটছে কেন? বেনাচিতির ফানুস বিক্রেতা রঘু মণ্ডলের দাবি, ‘‘ঠিক ব্যবহারবিধি না মানাতেই এ সব হচ্ছে।’’ অন্য এক বিক্রেতার দাবি, অনেকেই ঠিক মতো না জ্বালিয়েই ফানুস ছেড়ে দেন। তাই, খানিক দূর গিয়েই তা নামতে থাকে। আবার বহুতলের ছাদ থেকে ফানুস ওড়ালে উপরের বাতাসের তীব্রতায় অনেক সময়েই তা নীচে নেমে যায় বলে দাবি একাধিক ক্রেতার।
তা হলে উপায়? দমকলের এক কর্তার দাবি, ‘‘ফানুস তৈরির গুণমান পরীক্ষা করে দেখার ব্যবস্থা থাকা দরকার। তা না হলে নিষিদ্ধ বাজির আওতায় ফানুসও দ্রুত জায়গা করে নেবে।’’
তবে শহরের একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এত দিন শব্দবাজির যন্ত্রণা ছিল। এ বার তার সঙ্গে যোগ হতে চলেছে ফানুস যন্ত্রণা।