পুরসভা ভোটে শিলিগুড়িতে দলের ফলাফল ‘অক্সিজেন’ জুগিয়েছে। তাতে উজ্জীবিত হয়ে এ বার সিপিএম লাগাতার আন্দোলনে নামতে চায় দুর্গাপুর পুরসভায়। পুর পরিষেবার সার্বিক ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে শহরে এক লক্ষ স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে তারা। এর পরে দু’দিনের পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়েছে সিপিএম। তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘মানুষ ওদের পরিত্যাগ করেছে। সেটা ওদের সবার আগে বোঝা দরকার।’’
সিপিএমের দুর্গাপুর ২ পূর্ব জোনাল কমিটির তরফে একটি লিফলেট ছাপানো হয়েছে। সেখানে পুর পরিষেবার ব্যর্থতার ২০ দফা নমুনা উল্লেখ করে শহরবাসীকে স্বাক্ষর করার আর্জি জানানো হয়েছে। রাস্তা, নিকাশি, পানীয় জল, জঞ্জাল সাফাই থেকে শুরু করে বস্তিবাসীদের দাবি-দাওয়া, বিপিএল তালিকায় অনিয়মের মতো সমস্যাও লেখা হয়েছে সেখানে। সিপিএমের ওই জোনাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায়সরকারের অভিযোগ, ‘‘পুর পরিষেবার হাল তলানিতে ঠেকেছে। এমনকী, বাম আমলে গড়ে তোলা শপিংমল, প্রেক্ষাগৃহ বা ইন্ডোর স্টেডিয়ামের ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণও হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের কাছে আমরা বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরতে চাই।’’ সিপিএম সূত্রে জানানো হয়েছে, এক লক্ষ সই সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, কয়েক হাজারও হবে কি না সন্দেহ! কারণ, পরিষেবার মান আগের বামফ্রন্ট পরিচালিত বোর্ডের থেকে অনেক ভাল হয়েছে। মেয়র অপূর্ববাবু বলেন, ‘‘যে অবস্থায় পুরসভা আমাদের হাতে এসেছিল তা বলার নয়। বাম পুরবোর্ড লক্ষ লক্ষ টাকা দেনায় ডুবিয়ে দিয়েছিল পুরসভাকে। সেখান থেকে ধাপে ধাপে আমরা বেরিয়ে এসেছি।’’
বর্তমানে পুরসভার ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩০টি তৃণমূলের দখলে। বামেদের দখলে রয়েছে ১১টি। কংগ্রেস ও বিজেপির দখলে রয়েছে একটি করে ওয়ার্ড। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, শনি ও রবিবার পুর পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে পদযাত্রা করবেন দলের ১৬৬৫ জন কর্মী। তবে শহরের সব ক’টি ওয়ার্ডে নয়, ১৫টি ওয়ার্ডে কর্মীরা ভাগ হয়ে আলাদা আলাদা দল গড়ে পদযাত্রা করবেন। সিপিএমের লিফলেটের শুরুতে শহরের পরিষেবার উন্নয়নের দাবির পাশাপাশি ওই ১৫টি ওয়ার্ডের উল্লেখ করে সেগুলির সমস্যা ও দাবি পৃথক ভাবে লেখা হয়েছে। সেই ওয়ার্ডগুলির সবগুলিই পড়ছে দলের দুর্গাপুর ২ নম্বর পূর্ব জোনাল এলাকার মধ্যে।
সিপিএমের এমন সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল। দলের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘সিপিএমের সংগঠন এতই দুর্বল যে শহরের মোট ওয়ার্ডের মাত্র এক তৃতীয়াংশে আন্দোলনের পরিকল্পনা নিতে হচ্ছে। তবে সেটুকুও ওরা করতে পারবে না। কারণ, মানুষ ওদের পাশে নেই।’’ সিপিএম নেতা পঙ্কজবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘পর্যায়ক্রমে শহরের অন্য ওয়ার্ডেও কর্মসূচি নেওয়া হবে।’’