ঘুরে-দেখা: মাধবডিহির জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনে দেবু টুডু। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
চারিদিকে ঘোলা জলের স্রোত। তার মাঝে কোথাও জেগে রয়েছে খড়ের চাল, কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি, গাছের একাংশ।
শুক্রবার জল ছাড়ার পরিমাণ কমলেও রায়নার মাধবডিহির প্লাবিত এলাকার বিশেষ উন্নতি হয়নি। শুক্রবার ওই এলাকায় গিয়ে ত্রাণের দাবিতে দুর্গতদের হাহাকারের মধ্যে পড়তে হয় জেলা সভাধিপতি দেবু টুডুকে। শুনতে হল বারো ঘন্টারও বেশি জলবন্দি থাকতে হয়েছে। পানীয় জলের অভাবের কথাও উঠে আছে। সভাধিপতি বলেন, “নৌকায় চেপে দুর্গত মানুষজনদের সঙ্গে কথা বলতে বিবেকে বাধল। তাই জলে নেমে গেলাম। অভাব-অভিযোগ শুনে যতটা পারি সাহায্য করেছি।” গত বুধবার বিকেলে জামালপুরের অমরপুর-শিয়ালা গ্রামে গিয়েও দুর্গতদের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন সভাধিপতি।
বুধবার রাতেই বড় বৈনানের কাছে মুণ্ডেশ্বরীর নদীর বাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে গোতান বাজার থেকে বিভিন্ন গ্রামে যাওয়ার রাস্তার উপর কালভার্ট ভেঙে বিপদ বাড়ে। দীর্ঘক্ষণ প্রশাসনের তরফেও পৌঁছনো যায়নি ওই সব গ্রামে। পরে অবশ্য বড় বৈনান, গোতান, কোটশিমূল, দামিন্যা-সহ বিভিন্ন এলাকায় ১২টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়।
এ দিন ক্ষোভ টের পেয়ে কোথাও কোমর জলে, কোথাও হাঁটু জলে নেমে দুর্গতদের কাছে গিয়ে অভাব অভিযোগ শোনেন সভাধিপতি। ত্রাণ শিবিরেও যান। এলাকার মানুষজন সভাধিপতির কাছে পানীয় জল ও ত্রাণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। গ্রামে দুটি ত্রাণ শিবির থাকালেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ জানান তাঁরা। সভাধিপতির নির্দেশে জলমগ্ন এলাকা থেকে বহু মানুষজনকে উদ্ধার করে প্রশাসন। নতুন করে ত্রাণ শিবিরও খোলা হয়। তাতেও ক্ষোভ মেটেনি। দুর্গতদের ক্ষোভ, “খাবার পরিমাণ খুবই অল্প। শিশু ও বয়স্কদের খুবই কষ্ট হচ্ছে।” ত্রাণের খাবার মিলছে না বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন।
রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনসার আলি খান বলেন, “আচমকা বাঁধ ভেঙে সবাই বানভাসি হয়ে পড়েছে। চারিদিক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় কিছু সমস্যা হচ্ছে। আমরা রাতভর জেগে আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছি।” মূল রাস্তার কালভার্ট সংস্কারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন সভাপতি। তাতে প্রশাসনের কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন।