প্রতীকী ছবি।
টাকার বিনিময়ে বন্দুকের নকল লাইসেন্স বিক্রি-কাণ্ডে নয়া মোড়। ছয় ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও নতুন নতুন তথ্য পেয়েছেন সিআইডি-র গোয়েন্দারা। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গোটা রাজ্য জুড়েই জাল বিস্তার করেছে নকল লাইসেন্সের কারবারের সঙ্গে জড়িতরা। শুধু তাই নয়, চক্রটি রাজ্যের বাইরেও সক্রিয় বলে জানতে পেরেছেন তাঁরা।
সিআইডি সূত্রে খবর, এই চক্রের বিষয়ে জানতে বিভিন্ন জায়গায় খবর নেওয়া হচ্ছে। বাজেয়াপ্ত হওয়া বন্দুক ও জাল লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকদের চিঠি দিয়েছে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা। এ ছাড়াও নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগকারী সংস্থাদের চিঠি দিয়ে তথ্য সংগ্রহ চলছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, নকল লাইসেন্স বিলি চক্রে আরও কয়েকজন জড়িত।
আট দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ধৃত সফিক মোল্লা, জুলিফকার শেখ, সাবির মণ্ডল, ইমানুল মণ্ডল, হাফিজুল শেখ ও বিমান মণ্ডলকে শনিবার বর্ধমানের সিজেএম আদালতে তোলা হয়। ছ’জনকে আরও তিন দিন সিআইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সেঁজুতি ভট্টাচার্য।
গত ১০ ডিসেম্বর কলকাতার দক্ষিণদাঁড়ি, জগৎপুর ও বণ্ডেল গেট এলাকায় হানা দিয়ে বিভিন্ন সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করা জুলফিকার, সাবির, ইমানুল, হাফিজুল ও বিমানকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাঁদের কাছ থেকে বন্দুকের জাল লাইসেন্স, পাঁচটি বন্দুক ও কয়েকটি গুলি উদ্ধার করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জাল লাইসেন্স তৈরির মূল মাথা সফিকের হদিশ পায় সিআইডি। মেমারি থানার হরিণডাঙা থেকে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বাড়ি থেকে কয়েকটি জেলার জেলাশাসক এবং বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সরকারি আধিকারিকদের নকল রবার স্ট্যাম্প পায় সিআইডি। সফিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইসমাইল মণ্ডল নামে আরও এক জনের জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে পারেন। গ্রেপ্তার করা হয় ইসমাইলকেও। তাঁর বাড়ি থেকে দু’টি বন্দুক ও ২ রাউণ্ড গুলি উদ্ধার হয়।
উদ্ধার হওয়া সরকারি আধিকারিকদের নকল রবার স্ট্যাম্প অন্য কোনও জালিয়াতিতে ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে সিআইডি। বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সরকারি আধিকারিকদের নকল স্ট্যাম্প কী কারণে তৈরি করা হয়েছিল, তা নিয়েও খোঁজখবর নিচ্ছেন গোয়েন্দারা। তবে, জাল বন্দুকের লাইসেন্স ব্যবহার করে অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করছেন বলে নিশ্চিত গোয়েন্দারা।