মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেতন ও কাজের নিশ্চয়তা দেওয়া হোক। তা না হলে ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’র অনুমতি দেওয়া হোক। শ্রম দফতরের অধীন ‘এসএলও’ (সেল্ফ এমপ্লয়েড লেবার অর্গানাইজ়ার) কর্মীরা শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এমন আর্জি জানিয়ে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। শুক্রবার মহকুমাশাসকের (দুর্গাপুর) কার্যালয়ে চিঠি জমা দেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠিটি পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে মহকুমাশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক ফোন ধরেননি। রাত পর্যন্ত উত্তর মেলেনি মেসেজেরও।
জেলায় বিভিন্ন পঞ্চায়েতে মোট ৮৫ জন ‘এসএলও’ রয়েছেন। কখনও পঞ্চায়েত কার্যালয়ে বসে, কখনও বা গ্রামে-গ্রামে ঘুরে শ্রম দফতরের সামাজিক সুরক্ষা যোজনার প্রচার ও তা কার্যকরী করার জন্য কাজ করেন তাঁরা। সে জন্য তাঁরা কমিশন পান। অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরে কমিশন মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা মাসিক বেতনের দাবি জানিয়েছেন।
নিশীথ চট্টোপাধ্যায়, মহেশ মণ্ডল, রমেশ মণ্ডল-সহ কয়েকজন ‘এসএলও’ জানান, তাঁদের অনেকেই দশ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করে আসছেন। ‘সামাজিক সুরক্ষা যোজনা’ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা, সেই যোজনার জন্য তাঁদের নির্দিষ্ট ফর্মপূরণে সাহায্য করা, প্রতি মাসে তাঁদের কাছ থেকে যোজনার জন্য অর্থ আদায় করা-সহ নানা কাজ তাঁদের করতে হয়। আবার যোজনার অন্তর্গত কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁর প্রাপ্য অর্থ পৌঁছে দেওয়ার কাজও তাঁদের করতে হয়। আবার শিক্ষা, মাতৃত্বকালীন অনুদান, পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ পৌঁছে দিতে হয় তাঁদেরই।
‘এসএলও’রা জানান, অসংগঠিত শ্রমিকদের প্রতি মাসে এই প্রকল্পে ২৫ টাকা করে দিতে হয়। কিন্তু রাজ্য সরকার তা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কয়েকমাস আগে। সেখান থেকে দু’টাকা করে কমিশন পেতেন তাঁরা। ফলে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কার্যত রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘‘রোজগার না থাকায় সংসার চালাতে ভীষণ সমস্যা হচ্ছে। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমাদের বেতন চালু করতে হবে। যদি তা না হয় তা হলে মৃত্যু ছাড়া, আমাদের আর কোনও পথ নেই।’’