আসানসোল আদালতে আইনজীবীরা। (ইনসেটে) আদালতে আনা হল সেহগাল হোসেনকে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।
গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সেহগাল হোসেনকে শুক্রবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিল। আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলায় আদালত চত্বরে, বিচারপ্রার্থী ও উৎসাহী জনতার ভিড় প্রায় ছিল না। তবে আইনজীবীদের অনেকেই ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মধ্যে চর্চাও হয়। এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে আসানসোলে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও।
এ দিন সকাল ৯টা থেকেই দেখা যায়, আদালত চত্বরে আইনজীবীদের উপস্থিতি। তাঁদের অনেককেই বলতে শোনা যায়, “সেহগালকে তোলা হচ্ছে শুনলাম। দেখি,বিষয়টা কী দাঁড়ায়।” এ দিকে, বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালত চত্বরে এ দিন উপস্থিত ছিলেন সেহগালের ‘অনুগামী’ হিসেবে পরিচিত কিছু লোকজনও। তবে তাঁরা বিক্ষিপ্ত ভাবে আদালত চত্বরে ছড়িয়ে ছিলেন। কেউই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। এ দিন সকাল থেকেই পুলিশের কড়া নজর ছিল। মোতায়েন করা হয় র্যাফের একটিছোট বাহিনীও।
শেষ পর্যন্ত, দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট নাগাদ সেহগালকে নিয়ে দু’টি গাড়িতে করে আদালত চত্বরে আসেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। প্রথম গাড়িটিতে ছিলেন সেহগাল, সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক। পিছনের গাড়িটিতে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। সিবিআই আদালত চত্বরের দরজার সামনেই সেহগালকে নিয়ে গাড়িটি দাঁড়ায়। সেহগালকে নিয়ে সোজা লিফ্টে করে চারতলায় এজলাসে নিয়ে চলে যান তদন্তকারীরা। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ একই ভাবে তাঁকে নিয়ে বেরিয়ে যান তদন্তকারীরা।
এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে আসানসোলে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। ঘটনাচক্রে, অনুব্রত গত আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন। সে সূত্র ধরে, বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দের কটাক্ষ, “তৃণমূল দলটা আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। আজ ওঁদের ‘বড় নেতার’ দেহরক্ষীকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে। ওঁদের বড়-ছোট-মেজো, সব স্তরের নেতাদেরই এ সব নানা দুর্নীতিতে যোগ রয়েছে। সিবিআই-এর তদন্তে মানুষের ভরসা আছে।” তবে তৃণমূলের অন্যতম জেলা সম্পাদক অভিজিৎ ঘটক বলেন, “বিজেপি নানা ছলে-বলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিরোধীদের চাপে ফেলতে চায়। আমাদের কেউ কোনও দুর্নীতি করেননি। আইন আইনের পথেই চলবে।”