জলমগ্ন হাজরাবেড়া প্রাথমিক স্কুল। —নিজস্ব চিত্র।
প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪২ জন। রয়েছেন দু’জন শিক্ষক। কিন্তু প্রতি বছর বর্ষায় কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুরের হাজরাবেড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর জলমগ্ন হয়ে যায় বলে অভিযোগ। এ বারেও মাসখানেক ধরে ওই স্কুল ভবনটি জলে মগ্ন। এই পরিস্থিতিতে অন্য একটি জায়গায় পড়াশোনা চললেও, চূড়ান্ত ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন বলে জানাচ্ছেন অভিভাবক থেকে শিক্ষকেরা।
এলাকাবাসী জানান, হাজরাবেড়ার বহু পরিবারই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া। ওই পরিবারগুলি থেকে অনেকেই পড়তে আসে এই স্কুলে। কিন্তু প্রতি বর্ষাতেই স্কুল ভবন থেকে জল বেরোতে পারে না। ফলে, গত প্রায় সাত বছর ধরেই স্কুল ভবনটি বর্ষায় জলে ভরে যায়। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের অদূরে, একটু উঁচু জায়গায় এক জনের দোতলা বাড়িতে স্কুল চলে বলে জানা গিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, পানাগড় বাইপাস চালু হওয়ার পরে থেকেই স্কুল ভবনটির এই হাল।
এই পরিস্থিতিতে সরব হয়েছেন শিক্ষকেরা। স্কুলের শিক্ষক মহম্মদ ইজারউদ্দিন মণ্ডল বলেন, “প্রায় তিন মাস ধরে এই অবস্থা চলে। বার বার প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দরবার করেও সমস্যা মেটেনি।”
অভিভাবকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরও এই সমস্যাটির কারণে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। তার পরে, জল বার করার ব্যবস্থা করা হয়। তৈরি হয় নিকাশি নালাও। কিন্তু তাতেও যে কিছু লাভ হয়নি, সেটা এ বছরের বর্ষায় বোঝা গিয়েছে। অভিভাবক সাবিনা বেগমের দাবি, “প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে বার বার সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। প্রতি বছর কয়েকটা মাস ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা কার্যত শিকেয় ওঠে। এই অবস্থাটা দ্রুত বদলানো দরকার।” সানোয়ারা বিবি নামে আরও এক অভিভাবকের বক্তব্য, “সাপ-সহ নানা কিছুর উপদ্রব বাড়ছে। বাড়ির বাইরে বেরোতেই ভয় লাগে, সেখানে স্কুলের এই অবস্থা।”
কিন্তু দীর্ঘদিনের পুরনো সমস্যার কেন সমাধান হয়নি? এ নিয়ে শুরু হয়েছে প্রশাসনিক দায় ঠেলাঠেলি। তৃণমূল পরিচালিত কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জয়জিৎ মণ্ডলের বক্তব্য, “পানাগড় বাইপাস তৈরির সময়ে জল নিষ্কাশনের উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে, এলাকায় জল জমতে থাকে। আমরা দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।” যদিও, যদিও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, এলাকায় নিকাশি নালা তৈরি করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর আর্জি: চাপান-উতোর যা হচ্ছে হোক। দ্রুত সমস্যার সমাধান হোক।