৮ মাস ধরে বেতন নেই, ক্ষুব্ধ কর্মীরা

বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে ভরসা ওঁরাই। কিন্তু তার জন্য মিলছে না বেতন। তাও ছ’ থেকে আট মাস ধরে। এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে গিয়ে ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে জানান জেলার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ১৬টি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৭০ জন কর্মীর।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:০৩
Share:

বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে ভরসা ওঁরাই। কিন্তু তার জন্য মিলছে না বেতন। তাও ছ’ থেকে আট মাস ধরে। এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে গিয়ে ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে জানান জেলার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ১৬টি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৭০ জন কর্মীর।

Advertisement

প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৭ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় বর্ধমানের ধাত্রীগ্রাম, পাটুলি, পূর্বস্থলী, শ্রীখণ্ড, কেতুগ্রাম, সিঙ্গট-মাঝিগ্রাম, মঙ্গলকোট, কাইগ্রাম, বহরান-বীরমপুর, অগ্রদ্বীপ, বৈদ্যপুর ১ ও ২, বড়শূল ও জ্যোৎগ্রামে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এই প্রকল্পগুলি তৈরি হয়। প্রাথমিক ভাবে ঠিকাদারদের হাতে থাকা ওই প্রকল্পগুলির বিষয়ে নানা অভিযোগ অভিযোগ ওঠায় ১৯৯৫ সালে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতি সেগুলি দেখভালের দায়িত্ব নেয়। দু’বছর আগে তৈরি আরও দু’টি প্রকল্প বর্তমানে রায়ান ২ পঞ্চায়েত ও আসানসোলের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতে রয়েছে।

বর্তমানে প্রকল্পের ‘অপারেটর’, ‘ভালভ্ম্যান’-সহ মোট ৭০ জন কর্মীর দৈনিক বেতন ২৬০ টাকা থেকে ২৮১ টাকা। কর্মীদের অভিযোগ, ঠিকমতো বেতন না মেলায় অনটনে দিন কাটছে তাঁদের। কেতুগ্রামের বিজয় পাল, রায়ান ২ পঞ্চায়েতের চাঁদুটিয়া প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রাকেশ দাঁ’দের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছি না। বাজারে ধার হয়ে গিয়েছে। সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি বা বিডিও-র কাছে দরবার করেও লাভ হয়নি।” ওই সব কর্মীদের দাবি, কাজের শুরুতে তাঁদের বলা হয়, ঠিকাদার সংস্থার হাত থেকে প্রকল্প চলে গেলে তাঁরা স্থায়ী হবেন। তা হয়নি। উল্টে বেতনই মিলছে না। এমনকী পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মামারবাড়ি, মেমারির মণ্ডলজোনা গ্রামে একটি নতুন প্রকল্প চালু হলেও সেখানেও কর্মী নিয়ে সমস্যা রয়েছে বলে খবর। পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলির যদিও দাবি, তহবিলের হাল ভাল না হওয়ার জন্য প্রতি মাসে বেতন দেওয়া যায় না।

Advertisement

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা যায়, ওই সব প্রকল্প হস্তান্তর হওয়ায় কর্মীদের বেতন-সহ যাবতীয় কাজের দায়িত্বে রয়েছে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েত।

প্রশাসন সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নির্দেশে জেলায় আরও ১৪২টি প্রকল্প জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে পঞ্চায়েতে হাতে আসবে। জল সরবরাহ কর্মচারী সমিতির বর্ধমানের সম্পাদক বিকাশ দাসের আশঙ্কা, “পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির হাতে থাকা প্রকল্পের কর্মীরা ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না। বাকি প্রকল্প চলে গেলে জেলায় প্রায় হাজার খানেক কর্মীরও একই দশা হবে।’’ ওই সমিতি সম্প্রতি জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডুর সঙ্গে দেখা করে বেতন নিয়ে সমস্যা, হস্তান্তর হওয়ার পরে পুরনো কর্মীদের ছাঁটাই না করার দাবি জানিয়েছে। দেবুবাবু অবশ্য বলেন, “ওই কর্মীরা একলপ্তে বেতন পেয়ে থাকেন। সকলেই যাতে কাজে বহাল থাকেন, তার জন্য পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিকে নির্দেশ দিচ্ছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement