গণপিটুনিতে মৃত্যু সালানপুরে

আসানসোল মহকুমার নানা প্রান্তে গত এক সপ্তাহের মধ্যে এই রকম গুজবের জেরে এ নিয়ে চারটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সালানপুর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৩৪
Share:

বেধড়ক: খুঁটিতে বেঁধে চলছে মারধর। সালানপুরে। নিজস্ব চিত্র

গণপিটুনির ঘটনায় জড়িতদের কড়া শাস্তি দিতে সম্প্রতি বিল পাশ করিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার পরেও লাগাম পরানো যাচ্ছে না এই ধরনের ঘটনায়। বুধবার সকালে পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুরে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। চোর ও ছেলেধরা সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তিকে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে জনতা। উদ্ধার করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে পুলিশও।

Advertisement

আসানসোল মহকুমার নানা প্রান্তে গত এক সপ্তাহের মধ্যে এই রকম গুজবের জেরে এ নিয়ে চারটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটল। গুজব না ছড়ানোর আবেদন জানিয়ে মাইকে প্রচার শুরু করেছে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ। পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ বলেন, ‘‘ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িত জনা দশেককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ সালানপুরের বনজেমাহারি কোলিয়ারি লাগোয়া দেন্দুয়া রেলগেটের কাছে ইতস্তত ঘোরাঘুরি করছিলেন বছর বিয়াল্লিশের ওই ব্যক্তি। অপরিচিত মুখ দেখে এলাকার কয়েকজন তাঁকে আটক করেন। সঙ্গে একটি ঝোলা থাকায় চোর ও ছেলেধরা সন্দেহে তাঁকে মারধর শুরু হয়। এর মধ্যে আরও লোকজন জড়ো হয়ে যায়। অভিযোগ, টেনেহিঁচড়ে রেলগেট থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয় ওই ব্যক্তিকে। মারের চোটে তিনি নেতিয়ে পড়লে বাঁধন খুলে মাটিতে ফেলে কিল, চড়, ঘুষি মারা হয়।

Advertisement

আধ ঘণ্টার মধ্যে সালানপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। জনতাকে সরিয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়। পুলিশের হাত থেকে আহতকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করে কয়েকজন। পুলিশ কোনওমতে ওই ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত নিহতের পরিচয় জানা যায়নি।

পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে খুনের মামলা রুজু করেছে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের খোঁজে দেন্দুয়া ও আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চলছে। তবে রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। ঘটনার পরেই অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় চোর ও ছেলেধরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, কে বা কারা এই ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর জামুড়িয়া ও কুলটিতে এবং ৭ সেপ্টেম্বর রাতে হিরাপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম রায় বলেন, ‘‘গুজব ছড়ানো রুখতে পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের তরফেও সচেতনতা প্রচারের ব্যবস্থা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement