কলেজের অধ্যক্ষের নাম করে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ঘিরে শোরগোল। —নিজস্ব চিত্র।
কলেজের এক ছাত্রীর প্রেমে পড়েছেন প্রাক্তনী। কিন্তু ছাত্রীর তরফে গুরুত্ব পাননি। তাতে তাঁর পড়াশোনা উঠেছে লাটে। কোনও কিছুতেই মন বসছে না ছাত্রের। এমতাবস্থায় ছাত্রীকে চিঠি কলেজের অধ্যক্ষের! চিঠিতে অনুরোধ, কলেজের প্রাক্তন ছাত্রের প্রেমের আবেদন যেন ভেবে দেখেন ছাত্রী। না হলে ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে ছেলেটির। কলেজের অধ্যক্ষের প্যাডে এমন ‘বিশেষ বিজ্ঞপ্তি’ ঘিরে শোরগোল পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে। এমন বিজ্ঞপ্তিতে ক্ষুব্ধ অধ্যক্ষ পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছেন। আর যে ছাত্রীর উদ্দেশে ওই ‘বিজ্ঞপ্তি’ তিনি পাত্তাই দিচ্ছে না বিষয়টিকে।
মঙ্গলবার গুসকরা মহাবিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে কলেজের প্যাডে লেখা চিঠি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। চিঠিতে রয়েছে অধ্যক্ষের সই এবং স্ট্যাম্প। চিঠির বক্তব্য, কলেজের এক ছাত্রীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন প্রাক্তন ছাত্র। তাই ছাত্রী যেন গুরুত্বের সঙ্গে তাঁর প্রস্তাব বিবেচনা করেন।
কলেজের প্যাডের উপরের অংশে লেখা, ‘বিশেষ বিজ্ঞপ্তি/ আবেদন।’ তার পর লেখা হয়েছে, ‘‘গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে পাঠরত পঞ্চম সিমেস্টারের ছাত্রী... ( চিঠিতে ছাত্রীর নাম এবং বাবার নামও উল্লেখ করা হয়েছে) জানানো যাচ্ছে যে, বেশ কিছু দিন ধরে আমাদের মহাবিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্র আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এক কথায় বলতে গেলে আপনার প্রেমে পড়েছে। কিন্তু আপনি কোনও সদুত্তর দিচ্ছেন না। যার ফলে তিনি পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছেন না।’’
চিঠির শেষাংশে লেখা হয়েছে, ‘‘আপনার কাছে একান্ত অনুরোধ, আপনি কিছু একটা করুন যাতে আমাদের ছাত্রের ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা না হয় এবং ঠিক করে পড়াশোনা করতে পারে।’’
কী ভাবে কলেজের অধ্যক্ষ এমন কোনও চিঠি দিতে পারেন তা নিয়ে হইচই শুরু হয়। বিষয়টি সম্পর্কে জানামাত্র গুসকরা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ তদন্ত করুক।’’ মনে করা হচ্ছে, গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে প্যাড ব্যবহার করে কেউ ওই ‘প্রেমপত্র’ লিখেছেন। অধ্যক্ষ নিজে মনে করছেন, পুরনো কোনও নোটিস স্ক্যান করে সিল, সই নিয়ে এই চিঠি তৈরি হয়েছে।
অন্য দিকে, যে ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে এই ‘বিজ্ঞপ্তি’, তিনি এ নিয়ে কথা বলতেই চান না। চিঠির কথা শোনামাত্র তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন। এই বিষয়ে ডিএসপি/ ডিএনডি বীরেন্দ্র পাঠক জানান, কেউ এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ পদক্ষেপ করবে।