খন্দে ভরা ব্যারাজের রাস্তায় নিত্য যানজট

সময়ে সংস্কার না হওয়ায় বেহাল হয়ে পড়েছে দুর্গাপুরের ডিভিসি ব্যারাজের উপরের রাস্তা। ফলে, যানজট হচ্ছে দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়া যাওয়ার রাস্তায়। অতিরিক্ত চাপ পড়ছে ছ’দশকেরও বেশি পুরনো ব্যারাজের উপরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৫ ০১:৪৭
Share:

সংস্কারের অভাবে এই হাল দুর্গাপুর-বাঁকুড়া যাতায়াতের রাস্তার। ছবি: বিকাশ মশান।

সময়ে সংস্কার না হওয়ায় বেহাল হয়ে পড়েছে দুর্গাপুরের ডিভিসি ব্যারাজের উপরের রাস্তা। ফলে, যানজট হচ্ছে দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়া যাওয়ার রাস্তায়। অতিরিক্ত চাপ পড়ছে ছ’দশকেরও বেশি পুরনো ব্যারাজের উপরে। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির জন্য সংস্কারের কাজ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি থামলেই কাজ শুরু হবে।

Advertisement

দামোদরের বন্যায় লক্ষ-লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতেন এক সময়। ১৯৪৩ সালের বন্যায় বহু মানুষ মারা যান, হাজার-হাজার বাড়ি ভেসে যায়। বিস্তীর্ণ এলাকার চাষের জমি নষ্ট হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় সরকার পদার্থবিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহাকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে। বর্ধমান, বাঁকুড়া ও হুগলির নিম্ন দামোদর এলাকাকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে আমেরিকার টেনেসি ভ্যালি অথরিটির (টিভিএ) অনুকরণে একটি সংস্থা গড়ার পরামর্শ দেয় কমিটি। টিভিএ-র প্রবীণ বাস্তুকার ডব্লিউএল ভুরডুইন নিজে এসে সব দিক খতিয়ে দেখে ১৯৪৪ সালে ব্যারাজ গড়ার পরামর্শ দেন। বরাকর নদের উপর তিলাইয়া ও মাইথন, দামোদরের উপরে তেনুঘাট ও পাঞ্চেত এবং কোনার নদীর উপরে কোনার জলাধার গড়া হয়। ১৯৫৫ সালে একমাত্র ব্যারাজটি তৈরি হয় দুর্গাপুরে। লম্বায় ৬৯২ মিটার এই ব্যারাজে গেটের সংখ্যা ৩৪টি। ব্যারাজ গড়ে ওঠার ফলে দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়ার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে ওঠে এই দুর্গাপুরের ব্যারাজের রাস্তা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাজের উপরে বেশ কিছু জায়গায় রাস্তার পিচ সাম্প্রতিক বর্ষায় উঠে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। পিচ উঠে গিয়ে বেরিয়ে পড়েছে কংক্রিটের মেঝে। যানজট তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলে, ব্যারাজের উপরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছে যানবাহন। অতিরিক্ত চাপ পড়ছে ব্যারাজের উপরে। এ ছাড়া দ্রুতগতির গাড়ি হঠাৎ এসে খানাখন্দে পড়ায় ব্যারাজের মূল কংক্রিটের চাদরেও চাপ পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়েছে।

Advertisement

ব্যারাজ পেরিয়ে প্রতি দিন দুর্গাপুরের বি-জোন থেকে বড়জোড়ার একটি বেসরকারি কারখানায় মোটরবাইকে চড়ে কাজ করতে যান তরুণ সামন্ত। তিনি বলেন, ‘‘একে রাস্তা খারাপ। তার উপরে যানজট। বিপজ্জনক পরিস্থিতি।’’ যাত্রীরা জানিয়েছেন, ব্যস্ত সময়ে দুর্গাপুরের দিকে সুকুমার নগর কলোনির আগে পর্যন্ত এবং বাঁকুড়ার দিকে প্রতাপপুর পর্ষন্ত সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছে যানবাহন। বিশেষ করে বিপাকে পড়ছেন বয়স্ক ও শিশুরা।

ব্যারাজ লাগোয়া এলাকার অংশবিশেষ পড়ছে দুর্গাপুর পুরসভার ৩ নম্বর বোরো এলাকায়। সেই বোরোর চেয়ারপার্সন শেফালি চট্টোপাধ্যায় জানান, ব্যারাজের বেহাল রাস্তার খবর তিনি ইতিমধ্যে জেনেছেন। সংশ্লিষ্ট দফতরে সংস্কারের আর্জি জানিয়ে যোগাযোগ করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সেচ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বৃষ্টির জন্য কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি থামলেই সমস্ত মেরামত করে ফেলা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement