আপার কেশিয়ার সেতুর দু’দিকে রাস্তা এখনও কাঁচা। নিজস্ব চিত্র
সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হলেও দু’পাশের সংযোগকারী রাস্তাটি এখনও পাকা করা হয়নি। ফলে, ভোগান্তি কমেনি রূপনারায়ণপুর, আপার কেশিয়া, কল্যাণগ্রাম-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। রাতবিরেতে সেতু পেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ছেন গাড়ি চালকেরা। জখম হচ্ছেন মানুষজন। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, প্রশাসনকে বারবার জানানো সত্ত্বেও কাজ শুরু হয়নি। যদিও ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির আশ্বাস, শীঘ্রই সমস্যা মেটানো হবে।
সালানপুরের জিতপুর-উত্তররামপুর পঞ্চায়েতের আপার কেশিয়া অঞ্চলে প্রায় তিরিশ হাজার মানুষের বাস। রূপনারায়ণপুর, ডাবর হয়ে সহজে আসানসোলে যাতায়াতের জন্য যে রাস্তাটি এলাকার মানুষজন ব্যবহার করেন, সেটির উপরে একটি ছোট সেতু রয়েছে। সেতুর তলা দিয়ে গিয়েছে একটি খাল (জোড়)। ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টির সময়ে সেটির জলের তোড়ে সেতুটি পুরোপুরি ভেঙে যায়। তার জেরে আপার কেশিয়ার সঙ্গে ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের যোগযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রূপনারায়ণপুর, সালানপুরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বাসিন্দাদের প্রায় সাত কিলোমিটার বেশি রাস্তা রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হত। বছরখানেক আগে এডিডিএ-র আর্থিক অনুদানে সেতুটি তৈরি করা হয়েছে।
সেতু তৈরি হলেও তার দু’পাশের সংযোগকারী রাস্তাটি এখনও পাকা করা হয়নি। ফলে, বিপাকে পড়ছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, রাতবিরেতে এই রাস্তা ধরেই তাঁদের চলাচল করতে হয়। গত বর্ষায় সেতুর দু’পাশে প্রচুর জল জমে যাওয়ায় বড় গর্তও তৈরি হয়েছে। সেগুলি কার্যত মরণফাঁদ হয়ে আছে বলে অভিযোগ গাড়ি চালকদের। সেতু লাগোয়া জমি ঢালু হয়ে থাকায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেতু পেরনোর সময়ে কোনও ভাবে বেসামাল হলেই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। স্থানীয় অটো চালক প্রদীপ বিশ্বাস জানান, সংযোগকারী রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রাতে এই রাস্তা ধরে যাত্রী পরিবহণ করা বন্ধ রেখেছেন। বাসিন্দারা অবিলম্বে ওই সংযোগকারী রাস্তা তৈরির দাবি তুলেছেন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুর নির্মাণ ও সংযোগকারী রাস্তা তৈরির জন্য এডিডিএ-র তরফে প্রায় এক কোটি ২০ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। গত বছর অক্টোবরে সেতুটির নির্মাণকাজ হয়ে গিয়েছে। এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সংযোগকারী রাস্তা তৈরি হল না কেন? ব্লক প্রশাসন বা পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের কাছে এর কোনও সদুত্তর মেলেনি। জিতপুর-উত্তররামপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা রাস্তাটি দ্রুত শেষ করার জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছি।’’ সালানপুরের বিডিও তপনকুমার সরকার ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফাল্গুনী ঘাষি কর্মকার, দু’জনেরই আশ্বাস, ‘‘এই সমস্যা দ্রুত মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’