প্রতীকী ছবি।
তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও পরে পুলিশের উপরে আক্রমণের অভিযোগে চার জনকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করেছে জামালপুর থানার পুলিশ। সে দিক বিকেলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কালো পতাকা দেখানোর অভিযোগে জৌগ্রামের কাছে বিজেপি-তৃণমূল গোলমাল বাধে। ধৃতদের দলের কর্মী দাবি করে বিজেপির অভিযোগ, তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যাতেই মন্তেশ্বরের ভাগরা বাজারে দিলীপবাবুকে ঘিরে ধরে তৃণমূলের পতাকা হাতে কিছু লোক বিক্ষোভ দেখায়। তার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে পিপলন বাজারে মেমারি-মালডাঙা রাস্তা অবরোধ করে বিজেপি।
জামালপুরে চার জনকে গ্রেফতারের প্রসঙ্গে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর অভিযোগ, ‘‘আমাদের ছেলেদের তৃণমূল মারল, পুলিশ লাঠি চালাল। আবার মিথ্যা মামলা করে জেলেও পাঠানো হল!’’ জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর তথা জামালপুরের প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিকের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বর্ধমানের বিজেপি নেতাদের উস্কানিতে তলোয়ার, লাঠি নিয়ে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা তৈরি করতে চাইছে বিজেপি।’’
শনিবার বিকেলে জৌগ্রামের কাছে আমড়া-নুর মোড়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ গাড়িতে যাওয়ার সময়ে তৃণমূলের কয়েকজন কালো পতাকা দেখায় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে ধুন্ধুমার বেধে যায়। দু’পক্ষের মধ্যে ইটবৃষ্টি, রাস্তার ধারে থাকা তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর হয় বলে অভিযোগ। এক তৃণমূল কর্মী জামালপুর থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশকর্মীদের দিকে ইট ছোড়া, গাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে স্বতঃপ্রণোদিত একটি মামলা রুজু করেছে পুলিশও। কয়েকজন পুলিশকর্মী ও এক সিভিক ভলান্টিয়ার জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় রাতেই দু’জনকে আটক করা হয়। পরে আরও দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। চার জনকে পরে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত অভিজিৎ সরখেল বর্ধমানের টিকরহাট, উত্তম মালাকার ৫ নম্বর ইছালাবাদ, গৌতম মণ্ডল জামালপুরের তেলে গ্রাম ও প্রদীপকুমার ঘোষ আবুজহাটির বাসিন্দা। ঘটনাস্থল থেকে লাঠি, রড, ইটের টুকরো, পাথর বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। রবিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে উত্তম ও প্রদীপকে দু’দিন পুলিশ হেফাজত ও বাকিদের বুধবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তেশ্বরের পিপলন বাজারে রবিবার বিকেল ৫টা থেকে প্রায় মিনিট কুড়ি অবরোধ চলে। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। শনিবার জামালপুর থেকে ফেরার পথে মন্তেশ্বরের ইছু ভাগরা বাজারে একটি দোকানে চা খেতে নামেন দিলীপবাবু। সেই সময়ে তৃণমূলের পতাকা হাতে কয়েকজন ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেয়। খানিক পরে দিলীপবাবু এলাকা ছেড়ে চলে যান। নোংরা রাজনীতি করতে তৃণমূল এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির কাটোয়া জেলা সাধারণ সম্পাদক সৌগত দে, স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি রাকেশ ঘোষেদের। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, বিজেপির উপরে ক্ষোভে এলাকার বাসিন্দারাই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।