আসানসোল হাসপাতালে চলছে চিকিৎসা।
রাতে রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল তাকে। মাথায়, হাতের আঙুলে চোট নিয়ে সপ্তাহখানেক ধরে ভর্তি আসানসোল হাসপাতালে। সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখছেন নার্সরা। সবাই মিলে নাম রেখেছেন ‘সহনা’। মাস আটেকের শিশুকন্যার কোনও অভিভাবকের খোঁজ এখনও মেলেনি। সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে কোনও হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, জানাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ আসানসোলের বরাচক স্টেশন লাগোয়া রেললাইনের ধারে ঝোপজঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় শিশুটি। মাথায় ও হাতে ভাল চোট ছিল। তাকে গরম কাপড়ে মুড়ে হাসপাতালে নিয়ে যান আরপিএফের কনস্টেবল রাজীব কর্মকার ও স্থানীয় চা বিক্রেতা মনোজকুমার রাম। হাসপাতালে তিন জন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে শিশুটি। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সারাক্ষণ চোখে-চোখে রেখেছেন নার্সরা। ওষুধ দেওয়া থেকে ঘুম পাড়ানো, সবই করছেন পালা করে। অনেকে ছুটির দিনেও এক বার দেখে যাচ্ছেন। হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘শীতের রাতে খোলা আকাশের নীচে অনেক কষ্ট সয়েছে শিশুটি। তাই আমরা ওকে সহনা নামে ডাকছি।’’
শিশুটির সব সময় খোঁজ রাখছেন চা বিক্রেতা মনোজবাবুও। তিনি জানান, প্রথম রাতে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, শিশুটির কাছে তাঁদের কাউকে থাকতে হবে। তিনি যেহেতু উদ্ধার করে এনেছিলেন তাই প্রথম রাত থেকে ৭২ ঘণ্টা শিশুটির কাছে ছিলেন। সুপার নিখিলবাবু বলেন, ‘‘শিশুটি এখন অনেকটা সুস্থ। হয়তো এ বার তাকে সরকারি হোমে পাঠাতে হবে।’’ মনোজবাবু বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে ওই বয়সের ছেলে আছে। মেয়েটিকেও আমার কাছে রাখতে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।’’ কিন্তু সুপার জানান, নিয়ম অনুযায়ী, হোমে পাঠানোর পরে এক বছর শিশুটির বাবা-মায়ের খোঁজ করা হবে। যদি না মেলে তবে সরকারি তত্ত্বাবধানে দত্তক দেওয়া হতে পারে।