তিনটি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ নির্ভর করেন এই হাসাপাতলের উপরে। কিন্তু পরিষেবা ও পরিকাঠামো নিয়ে বিস্তর অভিযোগ থাকায় অনেকেই মুখ ফিরিয়েছিলেন কালনা মহকুমা হাসপাতাল থেকে। কিন্তু সম্প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, গত তিন বছরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোয় রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। তাঁদের দাবি, শহরের ছ’টি নার্সিংহোম বন্ধ। সেই চাপও সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে।
কী রকম পরিকাঠামোর উন্নতি হয়েছে? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্তামানে এখানে ৪৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ তিন বছর আগেও এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সমস্যার অভিযোগ উঠত ভুরি ভুরি।
এ ছাড়া এইচডিইউ, এসএনসিইউ, এইচআইভি পরীক্ষা কেন্দ্র-সহ নানা বিভাগ, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান, নিকাশি নালা, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর প্রভৃতি পরিকাঠামোও তৈরি হয়েছে হাসপাতালে। অথচ এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে বছর খানেক আগেও অভিযোগ ছিল, পরিকাঠামো না থাকায় কথায় কথায় রোগীদের ৬০ কিলোমিটার দূরের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানানন্তরিত করা হতো। সেই ছবি এখন বদলেছে বলে দাবি।
শুধু তাই নয়। নিরাপত্তা ঢেলে সাজানো, অডিও-মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রচার, সাউন্ড বক্সে গান বাজানো-সহ বেশ কয়েকটি অভিনব পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি। তাঁদের আরও দাবি, হাসপাতালে ২১৪টি শয্যা থাকলেও বর্তমানে প্রতি দিন ৩৬০ জনেরও বেশি রোগীকে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে বোঝাতে গিয়ে একটি পরিসংখ্যান দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, বহির্বিভাগ থেকে ২০১৪ সালে ১১৭৫৯৪ জন ও ২০১৫ সালে ১৩৭৯৬৭ জন পরিষেবা পেয়েছিলেন। ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১৮৩৩৭৩ জন। অন্তর্বিভাগেও ২০১৪-র তুলনায় প্রায় এগারো হাজার রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে দাবি। রোগীরা বর্ধমান ছাড়াও নদিয়া ও হুগলি থেকেও আসেন বলে দাবি।
হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘চিকিৎসক, নার্স-সহ হাসপাতালের বিভিন্ন কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই ফলেই হাসপাতাল আস্থা ফিরে পেয়েছে। কাজের নিরিখে বিভিন্ন চিকিৎসক, ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মী-সহ বিভিন্ন কর্মীদের পুরস্কৃত করা হবে।’’