শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সুনীল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল। এর পরে, তাঁর বাড়ির এলাকা কাঁকসায় জনতা খানিক ‘নিস্পৃহ’। তবে বিষয়টি নিয়ে সামান্য রাজনৈতিক চাপানউতোর রয়েছে এলাকায়।
২০১১-য় রাজ্যে পালাবদলের ভোট। সে বারই প্রথম কাঁকসা থানার উল্টো দিকের, তেতলা বাড়িটির বাসিন্দা সুনীলবাবু গলসি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটে প্রার্থী হন। জয়ও আসে। তবে ২০১৪-য় মুকুল রায়ের হাত ধরে কাঁকসা হাইস্কুলের বাংলার প্রাক্তন শিক্ষক সুনীলবাবু তৃণমূলে যোগ দিয়ে বর্ধমান পূর্ব আসন থেকে লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হন। ২০১৯-এও আসে জয়। কিন্তু তার পরে থেকেই কিছু বিষয় নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে তাঁর ‘মতান্তর’-এর কথা জানাচ্ছিলেন সুনীলবাবু, খবর স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সূত্রে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হওয়া, তাঁর মায়ের নিয়মভঙ্গের অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারীর আগমন ও বৈঠক এবং সর্বোপরি শনিবার অমিত শাহের সভায় তাঁর বিজেপিতে যোগদান— ‘মাস্টারমশাই’-এর (এই নামেই এলাকায় পরিচিতি সুনীলবাবুর) পরপর এমন পদক্ষেপ প্রসঙ্গে এলাকার লোকজন খুব একটা মুখ খুলতে চাননি।
মাস্টারমশাইয়ের পদক্ষেপে খানিকটা যেন ‘নিস্পৃহ’ স্থানীয় বাসিন্দা নীলকণ্ঠ পাল, তন্ময় দে’রা। তাঁরা বলেন, ‘‘মাস্টারমশাইয়ের দলবদল, তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আমরা শুধু চাই, এলাকার উন্নয়ন হোক তাঁর হাত ধরে।’’ এ দিন, কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন পেশায় রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী সাংসদের স্ত্রী কাজলীদেবী। তিনি অবশ্য স্বামীর এই পদক্ষেপ নিয়ে কোনও মন্তব্যকরতে চাননি।
তবে এ দিন, সুনীলবাবুর বিজেপিতে যোগদানকে কেন্দ্র করে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে তৃণমূল-বিজেপিতে। তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী বলেন, ‘‘ওঁর নীতি-আদর্শ বলে কিছু নেই। আগে ফরওয়ার্ড ব্লকে ছিলেন। পরে তৃণমূলে, এখন বিজেপিতে যোগ দিলেন। ফলে, এমন নেতার কোনও আদর্শ থাকতে পারে না। আমাদের দলে কোনও সমস্যা হবে না।’’ এ দিকে, কাঁকসার বিজেপি নেতা রমন শর্মা বলেন, ‘‘সুনীলবাবুকে দলে স্বাগত। বিজেপি নেতাকেন্দ্রিক দল নয়। আমরা একটা আদর্শ মেনে চলি। আমাদের কোথাও কোনও সমস্যা নেই।’’