তৎকালে রেলের সংরক্ষিত টিকিট অসাধু উপায়ে দেওয়ার অভিযোগে এক বুকিং ক্লার্ককে সাসপেন্ড করার কথা জানাল পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন। সেই সঙ্গে বিভাগীয় তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই ক্লার্ক কাজে যোগ দিতে পারবেন না।
ডিভিশন কর্তৃপক্ষের দাবি, ঝাড়খণ্ডের কুমারডুবি স্টেশনে কর্মরত ওই ক্লার্ক সম্প্রতি দালালদের সঙ্গে যোগসাজস করে অসাধু উপায়ে টিকিট দিচ্ছিলেন। এই ঘটনায় প্রচুর টাকার আর্থিক লেনদেনের সঙ্গেও ওই ক্লার্ক জড়িয়ে পড়েন বলেও অভিযোগ। এমন ঘটনার সময়ে কয়েক জন সাধারণ যাত্রী পুরো বিষয়টি মোবাইলে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করেন। তা টের পাননি ওই ক্লার্ক।
রেলকর্তারা জানান, ওই ভিডিয়ো রেকর্ডিংটি আসানসোল রেল ডিভিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানান যাত্রীদের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ম্যানেজার তথা জনসংযোগ আধিকারিক রাহুল রঞ্জন বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ওই বেআইনি কাজে ওই বুকিং ক্লার্কের জড়িত থাকার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। ওই তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাঁকে বুকিং ক্লার্ক পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’
ডিভিশন সূত্রে জানা যায়, কুমারডুবি রেল স্টেশনে অসাধু উপায়ে তৎকালে রেলের সংরক্ষিত টিকিট দেওয়ার অভিযোগ অতীতেও উঠেছে। এমন ঘটনা ঠেকাতে রেলের বাণিজ্য বিভাগ স্টেশন চত্বরে সিসিটিভি ক্যামেরাও বসিয়েছে। কিন্তু তার পরেও এমন অভিযোগ সামনে আসায় বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় রেলকর্তাদের একাংশ। আরও অভিযোগ, বরাকর রেল স্টেশনেও তৎকাল টিকিট কাটার সময়ে সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড থেকে আসা একদল দালালের ‘দাপট’ দেখা যাচ্ছে। এমনকি, আসানসোল স্টেশনের মূল বুকিং অফিসেও সম্প্রতি এমন অভিযোগ উঠেছিল।
রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি দালাল-দৌরাত্ম্য ঠেকাতে রেল নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আধিকারিকেরা জানান, তৎকালে রেলের সংরক্ষিত টিকিট কাটার সময়পর্বের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আরপিএফ কর্তারা উপস্থিত থাকছেন। এই পদক্ষেপ করার ফলে দালাল-দৌরাত্ম্যে বেশ খানিকটা লাগাম পরানো গিয়েছে বলে দাবি রেলকর্তাদের। তাঁদের সূত্রেই জানা যায়, কুমারডুবির ঘটনার প্রেক্ষিতে রেলের তরফে ডিভিশনের সীতারামপুর, কুলটি, বরাকর ও রবীন্দ্র ভবন লাগোয়া সংরক্ষণ কাউন্টারগুলিতেও তৎকালে রেলের সংরক্ষিত টিকিট কাটার সময়পর্বে রেল নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হবে।