মহিলা চালককে সংবর্ধনা দিল রেল কর্তৃপক্ষ

আসানসোল ডিভিশনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন পায়েল ও তাঁর সহকারী চালক সুরুচি কুমারী। পায়েল এখানে প্রায় ন’বছর চাকরি জীবন শেষ করলেও সুরুচি রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:১১
Share:

পায়েল মিশ্র।

যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। আবার এই সত্যি প্রমাণ করেছেন পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের মহিলা ট্রেন চালক পায়েল মিশ্র। শুক্রবার পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনে দ্বিতীয় মহিলাচালক হিসেবে চাকরি জীবন শেষ করলেন তিনি। তবে একেবারে অবসর নেননি। মধ্য রেলের পুণাতে বদলি হন।

Advertisement

রেল সূত্রে খবর, আসানসোল ডিভিশনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন পায়েল ও তাঁর সহকারী চালক সুরুচি কুমারী। পায়েল এখানে প্রায় ন’বছর চাকরি জীবন শেষ করলেও সুরুচি রয়েছেন। তাঁদের কাজের প্রতি আনুগত্য দেখে আসানসোল ডিভিশনের ডিআরএম প্রশান্তকুমার মিশ্র সম্প্রতি দু’জনকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন। খুশি হয়েছেন তাঁর সহকর্মীরাও।

নিজের চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতা শোনানোর সময় পায়েল মিশ্র জানালেন, ২০০৮ সালে তিনি পরীক্ষা দিয়েই ইস্টকোস্ট রেলে সহকারী ট্রেন চালকের চাকরি পান। প্রায় ন’বছর চাকরি করার পরে তিনি রেল কর্তাদের কাছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনে বদলি হতে চেয়ে আবেদন করেন। ২০১২ সালের ১০ এপ্রিল তাঁকে পাকাপাকি ভাবে আসানসোল ডিভিশনে বদলি করে আনা হয়। এখানেই তিনি সহকারী ট্রেনচালক হিসেবে চাকরি করতে থাকেন। পাশাপাশি স্বাধীনভাবে ট্রেনচালকের প্রশিক্ষণও নিতে থাকেন। রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরাও তাঁকে সাহায্য করেন। অবশেষে ২০১৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি আসানসোল থেকে প্রথম একটি মালগাড়ি চালিয়ে বর্ধমান পর্যন্ত যান। এরপরে তিনি বহু বারই একক ভাবে সহকারীকে সঙ্গে নিয়ে মালগাড়ি ট্রেন চালিয়েছেন। পায়েল বলেন, ‘‘ওই দিন আমি জীবনে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছিলাম।’’ রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে ওই দিন সহকারী চালক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরও এক মহিলা কর্মী সুরুচি কুমারী।

Advertisement

চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পায়েল মিশ্র আসানসোল রেল ডিভিশনে চাকরি করেছেন। ১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মধ্য রেলের পুণাতে বদলি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানে চালক হিসেবেই যোগ দিয়েছেন। কুলটির সীতারামপুর এলাকার বাসিন্দা পায়েল কথার মাঝেই জানালেন, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের উচ্চপদে চাকরি করেন তাঁর স্বামী সূর্যনারায়ণ মহাপাত্র। স্বামী ও তিন বছরের শিশুকে নিয়ে তাঁর সংসার। সব দায়িত্ব সামলেই তাঁকে ট্রেন চালাতে যেতে হয়। তিনি বলেন, ‘‘চাকরিটা করতে ভাল লাগে। তাই অনেক কষ্ট স্বীকার করেও চালিয়ে যাচ্ছি।’’ আসানসোলের ডিআরএম প্রশান্তকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘একজন মহিলা হিসেবে পায়েল যে কৃতিত্ব দেখিয়েছে তা রেলের জন্য গর্বের।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement