রাস উৎসবের তোড়জোড়। দাঁইহাটে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
করোনার প্রকোপে ভাটা পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাটের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবে। উদ্যোক্তাদের দাবি, প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া নিয়মের মধ্যে থেকেই পুজো করবেন তাঁরা। স্বাস্থ্য-বিধি মেনে বার হবে না শোভাযাত্রাও।
শনিবার দুপুরে রাস উৎসব কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে উৎসবের সূচনা করেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ছিলেন কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, দাঁইহাট পুরসভার প্রশাসক শিশির মণ্ডল। বড় বাজেটের রাস উৎসব কমিটিগুলির দাবি, খরচ কমিয়ে ‘থিম’ সাজাচ্ছেন তাঁরা। খোলামেলা রাখা হবে মণ্ডপও।
দাঁইহাট শহরের ১৪টি ওয়ার্ডে প্রায় ৮০টি পুজো হয়। এর মধ্যে ১৭টি কমিটি কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে চোখধাঁধানো মণ্ডপ, আলোকসজ্জায় ‘থিম’-এর পুজো করে। তা দেখতে প্রতি বছর লাইন পড়ে দর্শনার্থীদের। আবার শোভাযাত্রার দিন ৬৩টি পুজো কমিটি নানা বাদ্যি-বাজনা, চলমান আলোকসজ্জা নিয়ে পথে বার হয়। শোভাযাত্রা দেখতে প্রশাসনের ঠিক করে দেওয়া নিদিষ্ট রুটে কার্যত জনস্রোত দেখা দেয়। এই বছরও করোনা-আবহে অন্য উৎসবের মতো রাসে কতটা রাশ টানা যাবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন শহরবাসী থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসনও।
প্রশাসনের দাবি, জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সংক্রমণ রুখতে ছোট মণ্ডপ করতে হবে। বিধি ভেঙে কোনও আড়ম্বর করা যাবে না। দুর্গাপুজোর মতোই যাবতীয় স্বাস্থ্য-বিধি মনে চলতে হবে। নিদিষ্ট দূরত্বে মণ্ডপের সামনে ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি দর্শনার্থী দাঁড়াতে পারবেন না। মাস্ক ছাড়া, রাস্তায় বেরোলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মণ্ডপের সামনে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করাও বাধ্যতামূলক। মণ্ডপ থেকে শুরু করে রাস্তায় কোনও ভিড়ও করা যাবে না।
ভাউসিং বিবেকানন্দ ক্লাবের তরফে সমিত দে বলেন, ‘‘আমরা প্রতি বছরই জাঁকজমক করে রাইরাজার পুজো করি। লক্ষাধিক টাকা বাজেট থাকে। করোনার জন্য এ বছর বাজেট কমিয়ে আনা হয়েছে। আদিবাসীদের জীবন নিয়ে থিম সাজিয়েছি। মণ্ডপের সামনে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হবে।’’ গঙ্গারাস্তা মোড়ের নটরাজ ক্লাবের সভাপতি অঞ্জনকুমার সাহাও বলেন, ‘‘আমরা কাল্পনিক মন্দিরের আদলে মণ্ডপ করছি। বাজেটের একটা অংশ করোনা সচেতনতায় ব্যয় করব।’’
দাঁইহাট পুরসভার প্রশাসক শিশির মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতিটি পুজো কমিটি যাতে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলে, তা বলা হয়েছে।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, ‘‘অতিমারি রুখতে শোভাযাত্রা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও রকম আড়ম্বর করা যাবে না। নির্দেশ না মানলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’