প্রতীকী ছবি।
‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্পে দু’জায়গায় তৈরি হয়েছে দু’টি ভবন। কিন্তু অণ্ডাল ও আসানসোলের ওই দুই ভবনই চালু করা যায়নি। তবে পড়ে থাকা ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্পের ভবনটিকে কেন্দ্র করে চা রফতানি করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন (অণ্ডাল)।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-র ডিসেম্বরে জেলা শিল্পকেন্দ্র ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে, অণ্ডালের ভাদুর গ্রামের সীমানায় ৪২টি দোকান ও দু’টি গুদামঘরবিশিষ্ট দোতলা ভবন তৈরি করে। ২২টি দোকান স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে পরিচালনার জন্য দেওয়া হলেও এখনও তা চালু হয়নি। গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে তৈরি ‘অণ্ডাল ব্লক কর্মতীর্থ পরিষেবা সমবায় সমিতি’-র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্যের দাবি, অণ্ডাল মোড় থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে ভবনটি রয়েছে। এখানে ক্রেতা মিলবে না ভেবেই কেউ আর দোকান খোলেননি।
এই পরিস্থিতিতে অণ্ডাল ব্লক প্রশাসনের শিল্প উন্নয়ন আধিকারিক সুজাতা সরকার জানান, প্রাথমিক ভাবে ‘টি বোর্ড’-এর সঙ্গে আলোচনা করে ‘চা-সঙ্গী’ প্রকল্প রূপায়ণের বিষয়ে অগ্রসর হওয়া গিয়েছে। বিডিও (অণ্ডাল) ঋত্বিক হাজরা বলেন, ‘‘দার্জিলিংয়ের চা বাগান থেকে চা পাতা এনে তা এখানে প্যাকেটবন্দি করে বাজারজাত করা হবে। এর বেশির ভাগই বিদেশে রফতানি হবে। রফতানির ক্ষেত্রে অণ্ডাল বিমানবন্দর ব্যবহার করা হবে।’’ প্রশাসনের দাবি, প্রকল্পে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রায় তিন হাজার সদস্য যুক্ত হবেন। ‘চা-সঙ্গী’ প্রকল্পের আধিকারিক বিদ্যুৎ পোদ্দার বলেন, ‘‘অণ্ডালে চা প্যাকেটজাত করে রফতানির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের স্বনির্ভর করার জন্য এই প্রকল্প। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতা করছে।’’
এ দিকে, প্রায় আড়াই বছর আগে আসানসোল রেলপাড়েও এই প্রকল্পের অধীনে ভবন তৈরি হয়। কিন্তু সেটিও এখনও পুরোপুরি চালু করা যায়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
প্রশাসন জানায়, এই বাজারে থাকা ২০টি দোকানের প্রতিটিই বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, কয়েকটি দোকান নিয়মিত খুলছে। বেশ কয়েকটি শুরু থেকেই বন্ধ। কয়েকটি খুবই অনিয়মিত ভাবে খোলা হয়। সম্প্রতি এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীর একাংশ। তাঁরা দাবি জানান, যাঁরা দোকান পেয়েও খুলছেন না, তাঁদের থেকে দোকানগুলি নিয়ে স্থানীয় বেকারদের মধ্যে বিলি করা হোক।
আসানসোল পুরসভার তরফে প্রকল্পটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা রবিউল ইসলাম অবশ্য বলেন, ‘‘কেন মালিকেরা দোকান খুলছেন না, তা বুঝে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা পুর কমিশনার খুরশিদ আলি কাদরিও বলেন, ‘‘বেকারদের স্বাবলম্বী করে তুলতেই এই উদ্যোগ। সমস্যা থাকলে মেটানো হবে। কিন্তু দোকান না খুলে ফেলে রাখা যাবে না। পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ যদিও ক্রেতাদের অনাগ্রহই দোকান না খোলার প্রধান কারণ বলে দাবি দোকান মালিকদের একাংশের। দোকান মালিক খুরশিদ আলম বলেন, ‘‘আমি দোকান খুলতে গিয়ে দেখি, ক্রেতারা আসছেন না। বাজারটির আরও প্রচার দরকার।’’ প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি, দোকান খুললেই ক্রেতারা আসবেন। পাশাপাশি, পুরসভা জানায়, এখানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা ও ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার খোলার তোড়জোড় চলছে। এর ফলেও, সাধারণ মানুষ এলাকায় আসবেন বলে ধারণা আধিকারিকদের। অতিরিক্ত জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘যাঁরা দোকান নিয়েও খুলছেন না, তাঁদের দোকান খোলার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে বাজারটি পুরোদমে চালু করার জন্য তোড়জোড় শুরু হয়েছে।’’