প্রস্তাবিত এলাকা। নিজস্ব চিত্র
পুরসভার বয়স দেড়শো পার। তবু বাসস্ট্যান্ড নেই দাঁইহাট শহরে।
প্রায় চার কিলোমিটার দূরে এসটিকেকে রোডে চৌরাস্তায় গিয়ে বাস ধরতে যথেষ্ট দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের দীর্ঘ দিনের দাবি, শহরের ভেতরে বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হোক। তবে এ বার বোধহয় শিকে ছিঁড়তে চলেছে তাঁদের কপালে।
দাঁইহাট পুরসভার দাবি, রেলগেটের কাছে দাঁইহাট-মন্তেশ্বর সংযোগকারী রাস্তার উপরে বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই ওই রাস্তাটি সংস্কারের কাজেও হাত দেবে পূর্ত দফতর। পুরসভার প্রস্তাব মেনে রাস্তার ধারের একটি পুকুরপাড় চত্বর গার্ডওয়ালও দিয়ে ঘিরে দেবে পূর্ত দফতর। পরে সেই জায়গায় পুরসভা মাটি ফেলে ভরাট করবে। সেখানেই বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে। পুর-কর্তাদের দাবি, পুকুরটির কোনও ক্ষতি হবে না। সম্প্রতি পুরপ্রধান ওই এলাকা পরিদর্শনও করেছেন।
যদিও কাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত ভরসা নেই শহরবাসীর। তাঁদের অনেকেরই সংশয়, বাসস্ট্যান্ড গড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু, ভোট মিটে গেলেই বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। সামনেই পুরভোট। তাই ফের ওই দাবি পূরণের বিষয়টি সামনে আসছে বলে মনে করছেন শহরের বাসিন্দাদের একাংশ। পুরসভার পাল্টা দাবি, শীঘ্রই বাসস্ট্যান্ডের পাশাপাশি, যাত্রী প্রতীক্ষালয়ও গড়ে তোলা হবে।
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ১৪টি ওয়ার্ডে প্রায় পঁচিশ হাজার মানুষ বসবাস করেন। নানা কাজে তাঁদের বাইরে যেতে হয়। ট্রেন ছাড়া, শহরবাসীর যোগাযোগের বড় মাধ্যম হল বাস। কিন্তু বাসস্ট্যান্ড না থাকায় মুশকিল রয়েই যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই মুহূর্তে শহরে তিনটি বাস ঢোকে। রেলগেট লাগোয়া তিন মাথার মোড়ে দাঁড়ায় বাসগুলি। ভোরে তা ছেড়ে চলে যায়। দিনভর আর কোনও বাস ঢোকে না শহরে।
বাগটিকরাপাড়ার বাসিন্দা অশোক দত্ত, রেলগেট এলাকার ব্যবসায়ী দীপকচন্দ্র সরকারেরা বলেন, ‘‘কুড়ি বছর ধরে শুনে আসছি যে এ বার শহরে বাসস্ট্যান্ড হবে। কিন্তু, আজও হল না। বাসস্ট্যান্ড না থাকায় আমাদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’’ তাঁরা জানান, চার কিলোমিটার দূরে, কাটোয়া-কালনা রোডে গিয়ে বাস ধরতে হয়। এতে সময় ও অর্থ দুইয়েরই অপচয় হয়। বাসস্ট্যান্ড হলে বাইরের লোকজনের আসা-যাওয়া বাড়বে। বাণিজ্যিক ভাবে শহরের উন্নতি হবে বলেও তাঁদের দাবি।
দাঁইহাটের পুরপ্রধান শিশির মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেকদিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছিলাম। অবশেষে সমস্যা মিটতে চলেছে। দাঁইহাট-মন্তেশ্বর রোড সংস্কার করার সময়ে রেলগেটের পাশে পুকুর পাড়ে পূর্ত দফতরের তরফ থেকে প্রায় ৪০০ ফুট গার্ডওয়াল গড়ে দেওয়া হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। পরে মাটি ফেলে সেখানেই আমরা বাসস্ট্যাণ্ড তৈরি করব।’’ কাটোয়া মহকুমা পূর্ত দফতরের (সড়ক) সহকারী বাস্তুকার কৃষ্ণকান্তি নন্দী জানান, দাঁইহাটের ভিতর দিয়ে রাস্তা করার সময়ে ওই ‘গার্ডওয়াল’ দেওয়া হবে। এ নিয়ে পুরপ্রধানের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে।