কালীপাহাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার রানিগঞ্জের প্রশাসনিক সভা থেকে আসানসোলের কালীপাহাড়ির বাস টার্মিনালের উদ্বোধন করেছেন। কিন্তু বাস্তবে এখনও টার্মিনালের বহু কাজই বাকি। সে সব শেষ হয়ে, কবে তা চালু হবে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যদিও টার্মিনাল তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এসবিএসটিসি) দ্রুত টার্মিনালটি চালু করার আশ্বাস দিয়েছে। এ দিকে, টার্মিনালটি অত্যন্ত দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় তৈরি হয়েছে বলেও মত সংশ্লিষ্ট নানা পক্ষের।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক দশক আগে আসানসোল শহরকে যানজট মুক্ত করতে শহরের বাইরে দূরপাল্লার বাস টার্মিনাল তৈরির দাবি উঠেছিল। কারণ, শহরবাসীর অভিজ্ঞতা, আসানসোলের উপর দিয়ে চলাচলকারী আন্তঃরাজ্য ও আন্তঃজেলা-সহ সমস্ত দূরপাল্লার বাস সিটি বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ায়। কিন্তু সেখানে জায়গা না পেয়ে নিত্যদিন বাসগুলি জিটি রোডের অর্ধেক অংশ দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। এর ফলে, তীব্র যানজট তৈরি হয় শহরে। এই পরিস্থিতিতে ২০১৮-য় রাজ্য সরকার কালীপাহাড়িতে বাস টার্মিনাল তৈরির কাজ শুরু করে। ঠিক হয়, দিল্লি ও কলকাতামুখী আন্তঃরাজ্য ও আন্তঃজেলার দূরপাল্লার বাসগুলি এই টার্মিনালে থামবে। শহরে ঢুকবে না।
কিন্তু বাস মালিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, কালীপাহাড়ির ওই টার্মিনালে বাস দাঁড়ানোর মতো পরিকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি। কারণ, ‘বাস-বে’গুলি আংশিক তৈরি হয়েছে। জল, বিদ্যুৎ সংযোগ, টার্মিনালে ঢোকা-বেরনোর রাস্তা-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর কাজও হয়নি। যদিও, এসবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান দীপ্তাংশু চৌধুরীর আশ্বাস, ‘‘কিছু কাজ বাকি আছে। দ্রুত সেগুলি শেষ করে টার্মিনালটি চালু করা হবে।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, অত্যন্ত দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় টার্মিনালটি তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বারওয়াড্ডা প্রজেক্ট ডিরেক্টর মলয় দত্তও জানান, কালীপাহাড়ি সেতুর উপরে জাতীয় সড়কের একটি লেন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে, দিল্লি ও কলকাতামুখী দুই বিপরীত দিকের যানবাহনকেই কলকাতামুখী লেন দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় জাতীয় সড়ক লাগোয়া টার্মিনালটি খুবই দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে মলয়বাবুরও মত।
এ ছাড়া, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মতে, দিল্লিমুখী দূরপাল্লার বাসগুলিকে টার্মিনালে ঢুকে যাত্রী নামিয়ে ফের জাতীয় সড়কে উঠতে হলে, চাঁদা পর্যন্ত পিছিয়ে এসে উল্টো দিকের লেন ধরতে হবে। তাই চাঁদায় একটি আন্ডারপাস করার প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে তা করা হয়নি। ফলে, জাতীয় সড়কের চাঁদামোড় লাগোয়া অংশটিও দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। মলয়বাবু বলেন, ‘‘বিষয়গুলি এসবিএসটিসি-কে জানানো হয়েছে।’’ দীপ্তাংশুবাবু জানান, টার্মিনাল চালুর আগে এই সব বিষয়ই পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।