দুর্গাপুর পুরসভার কর্মীদের পিএফ-এর টাকা কেটে নিল সংশ্লিষ্ট দফতর।
পুরসভার আপত্তি সত্ত্বেও সাফাইকর্মীদের প্রভিডেন্ড ফান্ড (পিএফ) বাবদ বকেয়া প্রায় সাড়ে ছ’কোটি টাকা দুর্গাপুর পুরসভার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নিয়েছে আঞ্চলিক পিএফ দফতর। ওই বকেয়া পুরসভাকে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আঞ্চলিক পিএফ দফতর। কিন্তু তা না করায় পুরসভার অ্যাকাউন্টে ওই পরিমাণ টাকা জমা রেখে তবেই বাকি টাকা লেনদেন করা যাবে বলে ব্যাঙ্ককে চিঠি দিয়েছিল পিএফ দফতর। সেই অ্যাকাউন্ট থেকেইপিএফ দফতর টাকা কেটে নিয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রায় সতেরোশো সাফাইকর্মী দৈনিক কাজ করেন। শহরাঞ্চলের জন্য রাজ্য সরকারের চালু করা ২০১০ সালের ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আরবান এমপ্লয়মেন্ট স্কিম’ অনুযায়ী প্রথমে তাঁরা দৈনিক একশো টাকা করে মজুরি পেতেন। পরে তা বেড়ে হয় ১২০ টাকা। পিএফ দফতরের অভিযোগ, ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই কর্মীদের পিএফের অর্থ জমা পড়েনি। শ্রম মন্ত্রকের নির্দেশে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি পুরসভাকে ১৯৫২ সালের কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড আইনের (এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ড ফান্ডস অ্যান্ড মিসলেনিয়াস প্রভিশনস অ্যাক্ট ১৯৫২) আওতায় আনা হয়। দুর্গাপুর পুরসভা পিএফের অর্থ জমা না দেওয়ায় শুনানিতে ডাকা হয়। পুরসভার তরফে দাবি করা হয়, ওই কর্মীরা যে সরকারি প্রকল্পে কাজ করেন তাতে পিএফ দেওয়ার কোনও কথা বলা নেই।
২০১৭ সাল থেকে এ বছরের ১৯ জুলাই পর্যন্ত এ নিয়ে দফায়-দফায় শুনানি হয়। গত ২৯ অগস্ট পিএফ দফতর পুরসভাকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়, প্রায় ৬ কোটি ৫৮ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা ১৫ দিনের মধ্যে পুরসভাকে জমা দিতে হবে। কিন্তু সেই টাকা জমা না দেওয়ায় ২৫ সেপ্টেম্বর যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে পুরসভার অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেখানে চিঠি দেয় পিএফ দফতর। পুরসভার অ্যাকাউন্টে যে টাকা জমা রয়েছে তার থেকে ওই পরিমাণ টাকা কেটে রেখে দিতে বলা হয়। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা যায়, পিএফ দফতরের নির্দেশিকা কার্যকর করা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ড ফান্ড আপিল ট্রাইব্যুনাল’-এ আবেদন জানানো হয়েছে। ৫ জানুয়ারি সেখানে শুনানি রয়েছে। তার আগেই পিএফ দফতর বকেয়া পিএফের টাকা ব্যাঙ্কের কাছ থেকে কেটে নেওয়ায় ক্ষুব্ধ পুরসভার কর্তারা। কেন পুরসভা ওই টাকা জমা দিতে বাধ্য নয়, ট্রাইব্যুনালের সামনে তা বিশদে তুলে ধরা হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি।