সিপিএম ও সিটুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
কোভিড-পরিস্থিতিতে বিধি-নিষেধের জন্য রাজ্য সরকার এখনও লোকাল ট্রেন চালুর অনুমতি দেয়নি। দুর্গাপুর দিয়ে যাওয়া লোকাল ট্রেন ফের চালু করতে হবে। সোমবার এই দাবিতে সিপিএম এবং সিটু দুর্গাপুর স্টেশনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করল। বিক্ষোভ শেষে স্মারকলিপি দেওয়া হয় স্টেশন ম্যানেজারকে। স্টেশন ম্যানেজার নিতাইকুমার দাস বলেন, ‘‘স্মারকলিপিটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন। আমাদের এখানে কিছু করণীয় নেই।’’
এ দিন সকালে বিক্ষোভকারীরা মিছিল করে স্টেশনে আসেন। তাঁরা লোকাল চালুর দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে স্টেশনে রেল কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। বিক্ষোভকারীদের তরফে সিপিএম এবং সিটুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার জানান, দুর্গাপুর হয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৪-১৫ জোড়া লোকাল ট্রেন চলাচল করত। গড়ে সাতশো-আটশো করে যাত্রী যাতায়াত করতেন প্রতিটি ট্রেনে। এখন সেই যাত্রীদের বেশি ভাড়া দিয়ে, নানা অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে কোনও না কোনও ভাবে গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে। এর ফলে, যেমন আর্থিক ভাবে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনই বেড়েছে যাত্রাপথের হয়রানি। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষজন। সিপিএম ও সিটু নেতৃত্ব এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই সরকারের বিরুদ্ধেই তোপ দাগেন।
সিটু নেতৃত্বের অভিযোগ, এই পরিস্থিতির ফলে, দিনমজুর, আনাজ ও ফল বিক্রেতা, নির্মাণকর্মীরা সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন। আনাজ বিক্রেতা অসীম দাস, নির্মাণকর্মী মহম্মদ সাদিকেরাও বলেন, ‘‘যে রাস্তা আমরা দশ-পনেরো টাকায় আসতাম, এখন সেই একই রাস্তা পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে ন্যূনতম ৫০ টাকা লাগছে। এ দিকে, কোভিড-পরিস্থিতিতে রোজগার অনেকটাই কমে গিয়েছে।’’
যদিও সিপিএমের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি ও তৃণমূল, দু’পক্ষই। বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য না চাইলে লোকাল ট্রেন চলবে কী ভাবে? সিপিএম অবুঝের মতো কথা বলছে।’’ তৃণমূলের অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘করোনা-পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই কাজ করছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে সিপিএম বা বিজেপির বিশেষ ভাবনার দরকার নেই।’’