বর্ধমানের বাজারে আদা কেনাবেচা। নিজস্ব চিত্র
আমিষ রান্না হোক বা নিরামিষ, প্রতিদিনের হেঁশেলে আদার প্রয়োজন প্রচুর। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও আদার জুড়ি নেই। অথচ মাসখানেক ধরে একশো টাকা কেজি থেকে আড়াইশো টাকা কেজিতে পৌঁছে গিয়েছে আদার দাম। ব্যবসায়ীদের দাবি, অনেকেই আদা কেনার পরিমাণ কমিয়েছেন। গরমে আদা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে দাম বাড়ছে, দাবি তাঁদের।
বর্ধমান শহরের উদয়পল্লি বাজারে ব্যবসায়ী তুষার কুন্ডুর দাবি, মাসখানেক হল আদার দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। পাইকারি ৬০-৭০ টাকা কেজি ছিল। এখন পাইকারি আদা কিনতে হচ্ছে দেড়শো টাকা কেজিতে। খুচরো আদা ১৮০ টাকা কেজি বা তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাঁর দাবি, ‘‘জোগান কম থাকায় এবং গরমে আদা পচে যাওয়ায় দাম বাড়ছে।’’ বর্ধমান শহরের রানিগঞ্জ বাজারের শ্রবণ সাউ বলেন, ‘‘৭০-৮০ টাকা কেজি পাইকারি হারে আদা বিক্রি হচ্ছিল। এখন সেই আদার দাম কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। আর খুচরো আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে।’’ বিক্রেতারা জানান, তামিলনাড়ু থেকে আদা আমদানি করা হয়। গরমে পচে যাওয়ায় আদা বাজারে আসছে কম।। আর শিলিগুড়ি থেকে যে আদা একটু কম দামে আসে, তার পরিমাণ কম হওয়ায় দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সেই কারণে আদার বিক্রিও কমেছে, দাবি তাঁদের।
বড়শুলের এক ব্যবসায়ী তুহিন মিস্ত্রির দাবি, ‘‘মাসখানেক আগেও ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় খুচরো আদা বিক্রি করেছি। এখন তার আড়াই গুণ দাম বেড়েছে। যাঁরা ২৫০ গ্রাম আদা কিনতেন, তাঁরা ১০০ গ্রাম আদা কিনছেন।’’ মার্চ থেকেই অসম, শিলিগুড়ি বা চেন্নাই থেকে আদা আমদানি করতে হচ্ছে, দাবি তাঁদের।
শক্তিগড় থানার ব্রাহ্মণপাড়ার বাসিন্দা ছবি রাণা বলেন, ‘‘আদা, পেঁয়াজ, রসুন ছাড়া কি রান্নায় স্বাদ আসে। দাম বেশি হলেও পরিমাণে কম কিনে কাজ সারতে হচ্ছে।’’ লাল্টু শেখও বলেন, ‘‘আদার দাম বেশি হলেও রান্নার প্রয়োজন কিনতে বাধ্য হচ্ছি।’’
জেলা কৃষি বিপণন দফতরের আসিট্যান্ট ডিরেক্টর প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে এখনও আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। এলে আলোচনা করা হবে।’’ জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘‘কেন এই ঘটনা ঘটছে, খতিয়ে দেখা হবে।’’