একশো দিনের কাজ করতে গিয়েছে উদ্ধার হয়েছে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন। কেউ তা হাতে নিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন, কেউ প্রণাম করছেন। কোথাও আবার বইয়ের পাতা থেকে উঠে এসেছে আলিবাবার গুহা— রাস উৎসবে এমনই নানা থিমে সাজছে দাঁইহাট।
ভাগীরথী তীরের এ শহরে রাসে শাক্ত ও বৈষ্ণব দুই মতেরই মিলন ঘটে। তাই শিব, কালী মূর্তির পাশাপাশি রাধাকৃষ্ণের মূর্তি পুজিত হয়। মূর্তির সাজ সাবেক হলেও মণ্ডপের সাজে থাকে নানা থিম।
গঙ্গা রাস্তার মোড়ের রেড সান ক্লাবের এ বারের মণ্ডপ হচ্ছে মন্দিরের আদলে। মন্দিরের বাইরে দেওয়ালে থাকছে ড্রাগন। ভেতরে দেখা যাবে মহীরাবন বধের দৃশ্য। ক্লাবের সম্পাদক সুব্রত বৈরাগ্য জানান, আয়োজন রয়েছে মেলার। ওই এলাকার নটরাজ সঙ্ঘের এ বারের থিম পুতুলের দেশ। ৩২ বছরের উৎসবে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে ফাইবারের রঙবেরঙের পুতুল, আমড়ার বীজ, হোগলা পাতা, পাটকাঠি, ঝিনুক দিয়ে। সম্পাদক অঞ্জন সাহা জানান, নটরাজের প্রতিমা করা হয়েছে এ বার। ভাউ সিং এলাকার বিবেকানন্দ সঙ্ঘের মূর্তি রাইরাজা। মণ্ডপ সাজছে বিয়ের নানা উপাচার যেমন শোলার টোপর, সিঁদুরের কৌটো, কুলো, শোলার কদমফুল দিয়ে। অর্ধগোলাকৃতি মণ্ডপটি তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, জানান সম্পাদক বাপ্পা দে। সাহাপাড়া নাগরিক মঞ্চের থিম আলিবাবা চল্লিশ চোর। গুহার আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। ক্লাব সম্পাদক সঞ্জয় সাহা জানান, ৪৯ বছরে পা দিল এই পুজো।
২৫ বছরে পা দেওয়া স্কুল রোডের প্রীতম ক্লাবের থিম একশো দিনের কাজ। ক্লাবের তরফে চিত্তরঞ্জন মণ্ডল জানান, রাস্তা থেকে একটু নীচে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। একশো দিনের কাজ করতে গিয়ে মাটি খুঁড়ে নানা ঐতিহাসিক সামগ্রী, যেমন বুদ্ধ, নটরাজ, রাধাকৃষ্ণের মূর্তির সন্ধান পাওয়ার দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হবে। কেউ মাটি খুঁড়ছে, কেউ উদ্ধার হওয়া মূর্তি প্রণাম করছে, আবার আলোকচিত্রী সেই দৃশ্যের ছবি তুলছে— এমনই ছবি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। মণ্ডপ তৈরির কাজ করছেন ক্লাবের সদস্যরাই।
৫০ বছরে পা দেওয়া সুভাষ রোডের বৌদ্ধ সঙ্ঘের মণ্ডপ সেজেছে রাজস্থানী পুতুল, কাগজ, ফোম দিয়ে তৈরি ঘোড়া, হাতি, পালকিতে। সম্পাদক নির্মলেন্দু ভট্টাচার্য জানান, রাসের পরের দিন বেরোবে ট্যাবলো। পাইকপাড়া জিতেন্দ্র স্মৃতি সঙ্ঘের মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে পাহাড়ের মধ্যে মন্দিরের আদলে। মূর্তি থাকবে নারায়ণের অনন্তশয্যার। সম্পাদক উদয় কর্মকার জানান, ৫০ বছরে পা দিয়েছে এ বারের পুজো।