এই পোস্টার নিয়ে বিতর্ক বর্ধমানে। ছবি: উদিত সিংহ
বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার দাবিতে পোস্টার পড়েছিল বর্ধমান শহরে। তারপর থেকে যতবারই বিজেপির ‘দ্বন্দ্ব’ সামনে এসেছে, নেতাদের নাম করে পোস্টার পড়েছে। কিছু দিন আগে বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া ‘নিখোঁজ’ দাবি করে পোস্টার পড়ে। পঞ্চায়েত ভোটের ফল বার হতেই ফের বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে বর্ধমানে।
দলের জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) অভিজিৎ তা ও সাংসদের জুটিকে তাড়িয়ে পূর্ব বর্ধমান বিজেপিকে বাঁচানোর ডাক দেওয়া হয়েছে ওই পোস্টারে। তবে কারা পোস্টার সাঁটিয়েছে, তা অজানা। বিজেপির দাবি, সংগঠন বাড়ছে বুঝতে পেরে তৃণমূল এ সব করছে। তৃণমূলের পাল্টা, সবই বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব।
বৃহস্পতিবার সকালেই বর্ধমান শহরের কার্জন গেট, জেলা প্রশাসন চত্বর, আলিশা, উল্লাস, বীরহাটায় ‘ভারত মাতা কী জয়’ লেখা ও বিজেপির প্রতীক পদ্মফুল দেওয়া পোস্টারটি দেখা যায়। সেখানে লেখা আছে, ‘এস এস অহলুওয়ালিয়া (সাংসদ) ও অভিজিৎ তাঁ (জেলা সভাপতি) জুটি হাটাও, বর্ধমান জেলা (পূর্ব) বিজেপি বাঁচাও’। বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলায় বার বারই অন্তর্কলহ প্রকাশ্যে এসেছে। বিধানসভা ভোটের আগে ‘নো ভোট টু বিজেপি’ পোস্টার দেখা গিয়েছিল। তার কয়েক দিনের মধ্যেই বর্ধমান শহরের ছয় বিজেপি নেতার ছবি দিয়ে তাঁরা কেন বিধানসভায় প্রার্থী হওয়ার যোগ্য নন, সেই ব্যাখা দিয়ে পোস্টার পড়ে। বিধানসভায় পূর্ব বর্ধমানে বিজেপির ভরাডুবির পরে প্রাক্তন জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীকে জেলা সভাপতি রাখার দাবিতেও পোস্টার পড়ে। সেই সময়েই বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অভিজিৎ তায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পোস্টার দেয় কেউ বা কারা। বার বার পোস্টার-রাজনীতি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলে। জলা সভাপতির দাবি, ‘‘এরা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত নয়। কিছু উন্মাদ পোস্টার দিয়েছে। দলের লোক হলে কি আমার নাম ভুল লিখত!’’
এ বার পঞ্চায়েত স্তরে ৪০১০টি আসনের মধ্যে ১৮৩৯টিতে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছিল। জিতেছে ১৯৮টি আসনে। বিজেপির দাবি, শতাংশের হিসেবে সিপিএমের চেয়ে এক শতাংশ বেশি আসন জিতেছেন তাঁরা। প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেখানে হয়েছে তার মধ্যে বিজেপি ১০.৮৬% আসনে জিতেছে। আর সিপিএম জিতেছে ৯.৪%। পঞ্চায়েত সমিতিতে সিপিএম ১০টি আসন পেয়েছে। বিজেপি পেয়েছে ১২টি। দলের জেলা মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘প্রহসন-লুটের ভোটেও বিজেপিকে আটকানো যায়নি। সংগঠনও বাড়ছে বুঝতে পেরেই তৃণমূল এ সব করাচ্ছে।’’ রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের পাল্টা দাবি, ‘‘এই পোস্টার বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রমাণ। আগেও এই ধরনের পোস্টার পড়েছে। সারা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও পূর্ব বর্ধমানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তাই দলের নিচু স্তরের কর্মীদের ক্ষোভ বাড়ছে।’’