Coal Smuggling

লালার জামিন নিয়ে তরজা খনি এলাকার রাজনীতিতে

মঙ্গলবার সকালে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন লালা। বছর তিনেক ধরে সুপ্রিম কোর্টের ‘রক্ষাকবচ’ রয়েছে তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৯:১৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

কয়লা চুরি মামলায় মূল অভিযুক্ত হয়েও অনুপ মাজি ওরফে লালা জামিনে মুক্ত হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর চলছেই। তৃণমূলের দাবি, লালার জামিন পাওয়া প্রমাণ করছে, কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গে বিজেপির আঁতাঁত রয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, কয়লা চুরির তদন্ত সিবিআই করছে। এই কারবারে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিজেপিই প্রথম পদক্ষেপ করেছে। দুষ্কৃতীরা শাস্তি পাবেই।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন লালা। বছর তিনেক ধরে সুপ্রিম কোর্টের ‘রক্ষাকবচ’ রয়েছে তাঁর। তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। সিবিআইয়ের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করলেও বিচারকের উষ্মা থেকে ছাড় মেলেনি। নির্দেশনামায় বিচারকের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ রয়েছে, লালার ‘রক্ষকবচ’ তুলতে সিবিআই উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি। তাই অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া হয়েছে। কয়লা চুরি মামলার মূল অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও লালার বিষয়ে সিবিআই-এর উদাসীনতা নিয়ে আগেও আদালতকে উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে।

কয়লা পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত জামিন পাওয়ায় সরাসরি বিজেপিকে দুষছে তৃণমূল-সহ নানা পক্ষ। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে শুভেচ্ছা জানাতে অন্ডাল বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন কয়লার অবৈধ কারবারে এক অভিযুক্ত, সমাজমাধ্যমে ছবি দিয়ে দাবি করেছিল তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘এটা কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ কয়লা কারবারির সাক্ষাৎই প্রমাণ করছে, বিজেপির সঙ্গে কয়লা মাফিয়াদের সুসম্পর্ক আছে। বিজেপির কথায় ইডি এবং সিবিআই চলে। ফলে, লালার বিরুদ্ধে সিবিআই কঠোর পদক্ষেপ করবে না, এটাই স্বাভাবিক।’’ সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়ের আবার দাবি, ‘‘উৎকোচের বিনিময়ে বিজেপি ও তৃণমূল, দু’দলেরই স্বার্থরক্ষা করেন লালা। ফলে, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কেউ লালার শাস্তি চায় না। তাই সে জামিন পেয়েছে।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ‘‘পুরোটা আপস-রফা। সিবিআই তোতাপাখি, বিজেপির শেখানো বুলি আউড়ায়। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন কয়লা মাফিয়ার আতিথ্য গ্রহণ করেন, সেখানে লালা শাস্তি পাবে, এমনটা ভাবার কারণ নেই।’’

Advertisement

বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় পাল্টা দাবি করেন, পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে অবৈধ কয়লা কারবারের রমরমা নতুন কিছু নয়। আসানসোল-রানিগঞ্জ, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূমের বিস্তীর্ণ এলাকায় অবৈধ খাদান খুঁড়ে কয়লা তুলে পাচার বাম আমলেই শুরু হয়।
২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূলের মদতে চলতে থাকে এই কারবার। নতুন নতুন সিন্ডিকেট গড়া হয়। তাঁর কথায়, ‘‘সেই কারবারের মাথায় বসেন লালা। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরে বিজেপিই অবৈধ কয়লা কারবার বন্ধে উদ্যোগী হয়। বিজেপির আমলেই সিবিআই প্রথম কয়লা মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। কয়লা চোরেদের জেলে ভরেছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলেই বোঝা যাবে, বিজেপি সরকার অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে কতটা সক্রিয়। আগে কখনও করেনি কোনও দল। ওদের কথায় বিভ্রান্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement