বেঙ্গল অম্বুজা এলাকার সেই স্পা। —ফাইল চিত্র।
বেআইনি কাজ-কারবারের অভিযোগ ওঠায় বিউটি পার্লার এবং স্পা সেন্টারগুলির ট্রেড লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ আগেই বন্ধ করে দিয়েছিল দুর্গাপুর পুরসভা। তার পরেও সেগুলি চলছে আগের মতোই। বাঁকুড়ার ঠিকাদার খুনের ঘটনার পরে এ বার সেগুলির তালিকা পুলিশের কাছে পাঠিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, ব্যবসার নাম করে কোনও ভাবেই অবৈধ কাজ কারবার চালানো যাবে না।
বছর পাঁচেক আগেও শহরের সিটি সেন্টার ও বিধাননগরে হাতে গোনা কয়েকটি স্পা সেন্টার ছিল। বিউটি পার্লার অবশ্য ছিল বেশ কিছু। কিন্তু গত কয়েক বছরে স্পা গজিয়ে উঠেছে অলিতে-গলিতে। স্পা-এর রমরমা দেখে মুনাফার লোভে সাধারণ বিউটি পার্লারগুলিতেও এই পরিষেবা যোগ করে দেন বহু পার্লারের মালিক। অভিযোগ, ক্রেতা টানতে এর পরেই শুরু হয়ে যায় প্রতিযোগিতা। স্পা-এর নাম করে অবৈধ কাজ-কারবার শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে দেহব্যবসা চালানোরও। সম্প্রতি বাঁকুড়ার ঠিকাদার বিপুল রায়চৌধুরীকে খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়ে গিয়েছে বেঙ্গল অম্বুজা এলাকার একটি স্পা-এর। সেখানকার এক কর্মী এক মহিলাকে গ্রেফতারও করেছে বাঁকুড়ার পুলিশ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১২২টি বিউটি পার্লার পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছিল। অধিকাংশ পার্লারেই স্পা-এর পরিষেবা দেওয়া হয়। সব থেকে বেশি পার্লার রয়েছে সিটি সেন্টার এলাকায়। বারবার বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠায় চলতি আর্থিক বছরে সেগুলির ট্রেড লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না করার সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। এই নির্দেশ কার্যকরের আগেই অবশ্য এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে সাতটি পার্লার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করিয়ে নেয়। অর্থাৎ, বাকিগুলি চলছে বিনা লাইসেন্সে। পুলিশের তরফে জানানো হয়, পুরসভা বা কোনও পক্ষ লিখিত অভিযোগ না করলে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা মুশকিল। এর পরেই নড়েচড়ে বসে পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের কাছে চিঠি পাঠানো ছাড়াও লাইসেন্সহীন পার্লারগুলির তালিকা পুরসভার ওয়েবসাইটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, রূপচর্চার কাজকর্ম হবে বলে লাইসেন্স নিয়ে এখন কিছু পার্লারে অবৈধ কাজ-কারবার চলছে। তা রোখার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মেয়র। তিনি আরও জানান, পার্লারের নতুন আবেদনপত্র বিবেচনা করা হচ্ছে না। যে সাতটি পার্লারের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হয়েছে, সেগুলিকেও ফের ডেকে পাঠিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুরসভার তালিকা পেলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতি শুধু বলেন, ‘‘তালিকা হাতে পেলেই আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’