ব্যস্ত রাস্তায় নিজের সন্তানকে বিক্রি করার জন্য হাক দিচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। প্রতীকী চিত্র।
সঙ্গে থাকা ১৪ মাসের বাচ্চাকে বিক্রি করতে চান বলে ভরা বাজারে চিৎকার করছেন ‘মত্ত’ এক ব্যক্তি। শনিবার সন্ধ্যায় আউশগ্রামের বটগ্রাম বাজারে এ দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত সেখানে হাজির লোক জন। পরে পুলিশের উদ্যোগে বাচ্চাটিকে চাইল্ড লাইনের মাধ্যমে হোমে পাঠানো হয়।
কী ঘটেছিল? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তিকে বটগ্রাম বাজারে দেখা যায়। তার কোলে ছিল শিশুটি। আচমকা সকলকে অবাক করে ওই ব্যক্তি চিৎকার করে বলতে থাকেন, বাচ্চাকে তিনি বিক্রি করতে চান। তাঁর কথা এবং আচরণ অসংলগ্ন হওয়ায় শিশুটির নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন সেখানে হাজির মানুষজন। তাঁরা খবর পাঠান গুসকরা ফাঁড়িতে। তড়িঘড়ি সেখানে যান গুসকরা ফাঁড়ির ওসি নীতু সিংহ এবং অন্য পুলিশকর্মীরা। তাঁরা দু’জনকে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে শিশুটির চিকিৎসা হয়। পরে বাচ্চাটিকে ফাঁড়িতে আনা হয়। তাকে গলা ভাত খাওয়ান এক মহিলা কনস্টেবল। তার পরে খবর দেওয়া হয় পূর্ব বর্ধমান জেলা চাইল্ড লাইনে।
জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর অভিজিৎ চৌবে বলেন, “শিশুটির বাবা মত্ত অবস্থায় ছিলেন। শিশুটিকে তিনি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। বিক্রি না করতে পারলে হয়তো ওকে কোথাও ফেলে দিতেন। শিশুটির মৃত্যু হত। শিশু সুরক্ষা কমিটির তত্ত্বাবধানে বাচ্চাটিকে হোমে রাখা হয়েছে।’’ পুলিশ জানায়, শিশুটির বাবাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘বাচ্চাটিকে তার বাবার কাছে দেওয়া নিরাপদ নয় বলেই ওকে চাইল্ড লাইনের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।’’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির বাবা দিনমজুর। তাঁর স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন। কয়েকদিন আগে তিনি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যান। সেই থেকেই শিশুটি এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল। দু’দিন আগে সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসে তার বাবা। দু’দিন ধরেই বাচ্চাটিকে নিয়ে ঘুরছিলেন তার বাবা।