জট কাটছে না জামালপুরের মহিলা আইনজীবী হত্যাকাণ্ডে

পুকুর পাড়ের দরজা দিয়েই ঢুকেছিল ‘চেনা’ আততায়ী

বুধবার ফরেন্সিক দল, মিতালীদেবীর বাড়ি লাগোয়া পাঁচিলে অনেকগুলি দাগ দেখতে পায়। আবার ওই বাড়ি থেকে পুকুর পাড়ের দিকে আসার পাঁচিলেও দাগ পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামালপুর শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫৭
Share:

মৃত মহিলা আইনজীবীর ঘরে তল্লাশি চালায় পুলিশ। (ইনসেটে) মিতালি ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

ফরেন্সিক দল তদন্ত করে যাওয়ার পরে মৃত মহিলা আইনজীবীর ঘরে তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। টিনের বাক্সে রাখা ‘মাঙ্কি ক্যাপে’র মধ্যে মেলে সোনার গয়না, হিরেও। এর থেকে জেলা পুলিশ কর্তাদের অনুমান, চুরি নয়, অন্য কোনও কারণেই খুন করা হয়েছে মিতালী ঘোষকে। মৃতার পরিজনেদেরও দাবি, খুনের পিছনে ‘গভীর চক্রান্ত’ রয়েছে।

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় জামালপুরের আঝাপুরের ওই ঘরের ‘সিল’ ভাঙে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, খুব পরিচিত কেউ বাড়িতে ঢুকেছিল। খুন করে পালানোর সময় সব তছনছ করে দেয়। যাতে পুলিশ বা বাড়ির লোকেদের সন্দেহ হয়, চুরির উদ্দেশেই খুন করা হয়েছে। কারণ, চোর কখনই গয়না ফেলে যেত না।

ঘটনার পর থেকেই মিতালীদেবীর ভাই গৌরাঙ্গ ঘোষ দাবি করেছিলেন, গয়নাগাঁটি উধাও। এ দিন অবশ্য তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছে স্রেফ চুরির জন্য দিদিকে খুন করা হয়নি। এর পিছনে গভীর চক্রান্ত রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বেশির ভাগ গয়না মিললেও এখনও গয়নার বাক্স পাওয়া যায়নি। সেখানেও কয়েক ভরি গয়না রয়েছে। চক্রান্তের শিকার আমিও হতে পারি। পুলিশকে বাড়ির সামনে পাহারা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’ পুলিশের তরফেও ওই পরিবারকেও আপাতত গ্রাম ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী ও পরিজনেদের উপরেও নজর রাখা হয়েছে, দাবি তদন্তকারীদের।

Advertisement

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বাড়ির পুকুর পাড়ের দরজা সন্ধ্যার পরে ব্যবহার করতেন না মিতালীদেবী। রাস্তার দিকের দরজা দিয়েই আসাযাওয়া চলত। অথচ, ওই দিন পুকুর পাড়ের দরজা খোলা হয়। তদন্তকারীদের সন্দেহ, চেনা লোক দেখেই দরজা খুলেছিলেন মিতালীদেবী। ধস্তাধস্তি, খুনের পরে, পাশের বাড়ির দু’টি সাড়ে পাঁচ ফুটের পাঁচিল ডিঙিয়ে পুকুর পাড়ে চলে যায় আততায়ী। বুধবার ফরেন্সিক দল, মিতালীদেবীর বাড়ি লাগোয়া পাঁচিলে অনেকগুলি দাগ দেখতে পায়। আবার ওই বাড়ি থেকে পুকুর পাড়ের দিকে আসার পাঁচিলেও দাগ পেয়েছে। এ ছাড়া, বাড়ি থেকে দু’জনের নাম লেখা দু’টি চিরকূট মিলেছে। ঘটনায় ওই দুই ব্যক্তির কী ভূমিকা, দেখা হচ্ছে।

মিতালীদেবীদের পড়শি কেয়া দাসের দাবি, ‘‘রাতে আমরা এই বাড়িতে থাকি না। আমাদের আর একটি বাড়ি আছে, সেখানেই থাকি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় চোদ্দো প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ি বন্ধ করে দিয়ে চলে গিয়েছিলাম।’’

তা হলে কেন প্রৌঢ়া আইনজীবীকে খুন করা হল?

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এখনও আমরা কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারিনি। তবে সম্পত্তিগত বা সম্পর্কজনিত কারণে খুন কি না, সেটা আমাদের ভাবাচ্ছে। ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে।’’ ময়না-তদন্তের রিপোর্টে ভারী কিছুর আঘাত মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement