কেতুগ্রামের খুনে পুলিশি তদন্তে প্রশ্ন বিরোধীদের

আরও একটা দিন পেরিয়ে গেল। কেতুগ্রামে তরুণীকে খুনের কোনও কিনারা হল না। কিনারা তো দূরস্থান, তদন্ত কতটা হচ্ছে, তা নিয়েই বিভিন্ন মহলে সংশয় রয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, আসলে সন্দেহভাজন তৃণমূলের লোক হওয়াতেই পুলিশ গড়িমসি করছে। শনিবার বিকেলে সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির তরফে কেতুগ্রাম থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অঞ্জু কর, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাধনা মল্লিক প্রমুখ সেখানে হাজির ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৫ ০২:১৪
Share:

গ্রামে অনুপম হাজরা।—নিজস্ব চিত্র।

আরও একটা দিন পেরিয়ে গেল। কেতুগ্রামে তরুণীকে খুনের কোনও কিনারা হল না।
কিনারা তো দূরস্থান, তদন্ত কতটা হচ্ছে, তা নিয়েই বিভিন্ন মহলে সংশয় রয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, আসলে সন্দেহভাজন তৃণমূলের লোক হওয়াতেই পুলিশ গড়িমসি করছে।
শনিবার বিকেলে সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির তরফে কেতুগ্রাম থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অঞ্জু কর, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাধনা মল্লিক প্রমুখ সেখানে হাজির ছিলেন। দাবি ছিল, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে, তরুণীর পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে হবে।
পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে মহিলা সমিতি। আইসি-র কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘‘বর্ধমানের ঘটনা হওয়া সত্ত্বেও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বদলে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে কেন দেহের ময়নাতদন্ত হল?’’ পুলিশ যদিও সরাসরি সে প্রশ্নের কোনও উত্তর দেয়নি। তারা শুধু দাবি করে, তদন্তের প্রয়োজনেই এমনটা করা হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘প্রথম থেকেই পুলিশ ও তৃণমূল যৌথ ভাবে খুনের ঘটনাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। কারণ এই খুনের সঙ্গে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জড়িত রয়েছে।’’
বুধবার রাতে কেতুগ্রামের বীরভূম লাগোয়া কাঁটাড়ি গ্রামে গভীর রাতে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বছর কুড়ির সাহিনা খাতুনকে গুলি করে মারা হয়। যদিও ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানি করা হয়নি। কেন সাহিনা অত রাতে ওই জায়গায় গেল, কেনই বা তাকে খুন করা হল, তা এখনও রহস্যই। ওই রাত তার মোবাইলে একটি ফোন এসেছিল বলে সাহিনার বোনপো জানালেও পুলিশ এখনও কললিস্ট ধরে অপরাধীর তল্লাশিতে নামেনি। সন্দেহভাজনদের জেরাও করা হয়নি।
এই কারণেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাচ্ছে বিরোধী দলগুলি। শুক্রবারই তরুণীর বাড়িতে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। এ দিন তিনি দাবি করেন, ‘‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা খুনের সঙ্গে জড়িত বলেই পুলিশ চুপ রয়েছে। এ রকম চললে আমরা কয়েক দিনের মধ্যেই কাটোয়ার এসডিপিও-কে ঘোরাও করব।’’

Advertisement

তবে এ দিন স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা কাঁটাড়ি গ্রামে গিয়ে দাবি করেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক গন্ধ নেই। দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে।’’ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক শেহ সাহানেওয়াজের দাবি, ‘‘গত দু’দিন ধরে আমি ওই তরুণীর বাড়ি গিয়েছি। বদমায়েশদের কোনও রঙ নেই। তাই কোনও রঙ না দেখে পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করুক। বিরোধীরা রাজনৈতিক কথা না বলে দোষীদের ধরতে সাহায্য করুক।’’

পুলিশ জানিয়েছে, আজ, রবিবার থেকে কাঁটাড়ি গ্রামে বসছে পুলিশ ক্যাম্প বসানো হচ্ছে। তরুণীর দেহটি যেখান থেকে পাওয়া গিয়েছিল, সেই পরিত্যক্ত বাড়ির কাছেই ক্যাম্পটি বসানো হবে। মূল উদ্দেশ্য, নজরদারি চালানো। পুলিশের দাবি, তরুণীর যে মোবাইল থেকে যে সব নম্বর পাওয়া গিয়েছিল, সেটি ট্র্যাক করেও বিশেষ এগনো যায়নি। পরপর পাওয়া তিন-চারটি নম্বরের প্রতিটিই বন্ধ।

Advertisement

বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল শুধু বলেন, ‘‘তদন্তে বেশ কয়েকটি নাম উঠে এসেছে। সব দিক খতিয়ে দেখতে একটু সময় লাগছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement