বাইক-মিছিল রুখল পুলিশ, ক্ষুব্ধ সিপিএম

নতুন শিল্প তৈরি, বন্ধ কল-কারখানা খোলা, হিংসা বন্ধ-সহ নানা দাবিতে এ দিন বানর্পুরের বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানা থেকে কলকাতায় নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় ওই দুই সংগঠন। সকালে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার গেটে কয়েকশো কর্মী-সমর্থক জমায়েত হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১৩
Share:

আসানসোলে এসএফআই এবং ডিওয়াইএফ কর্মীদের সঙ্গে বচসা পুলিশের। নিজস্ব চিত্র

সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের নবান্ন অভিযান আটকে দিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোল ও দুর্গাপুরে আটকানো হয় মিছিল। পুলিশের দাবি, মিছিলের অনুমতি নেই। যদিও তা মানতে চাননি সিপিএম নেতৃত্ব। মিছিল আটকানোর প্রতিবাদে দু’জায়গাতেই অবরোধ শুরু করেন ডিওয়াইএফ এবং এসএফআই কর্মী-সমর্থকেরা। সে নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে। দুর্গাপুরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করায় ৮২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

নতুন শিল্প তৈরি, বন্ধ কল-কারখানা খোলা, হিংসা বন্ধ-সহ নানা দাবিতে এ দিন বানর্পুরের বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানা থেকে কলকাতায় নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় ওই দুই সংগঠন। সকালে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার গেটে কয়েকশো কর্মী-সমর্থক জমায়েত হন। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ মোটরবাইক মিছিল রওনা হতেই বাধা দেয় পুলিশ। রাস্তা আটকে দেওয়া হয়। বিক্ষোভ শুরু হয়। আরও অনেক কর্মী-সমর্থক জড়ো হয়ে বার্নপুর রোড অবরোধ করেন। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। দু’দিকে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে যানবাহন। শুধু তিনটি অ্যাম্বুল্যান্সকে ছাড় দেওয়া হয়। আটকে পড়েন ইস্কোর শ্রমিক-কর্মীরা। ঘণ্টাখানেক পরে এসিপি (পশ্চিম) সত্যব্রত চন্দ ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে স্মারকলিপি দিয়ে অবরোধ তুলে নেন।

মিছিলে যোগ দিতে এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ প্রায় একশো নেতা-কর্মী দুর্গাপুর থেকে মোটরবাইকে আসানসোল রওনা হন। দুবচুড়ুরিয়ার কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে আগে থেকে ব্যারিকেড তৈরি করে রেখেছিল পুলিশ। ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক মোদীর নেতৃত্বে পুলিশ মিছিল আটকে দেয়। পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ডিওয়াএফ এবং এসএফআই নেতা-কর্মীরা। কয়েকজন রাস্তায় বসে পড়েন। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ ৮২ জনকে গ্রেফতার করে দুর্গাপুর থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

মিছিলে ছিলেন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা মোটরবাইকে যাচ্ছিলাম, রাস্তায় কোনও নিয়ম ভাঙিনি। তা সত্ত্বেও অন্যায় ভাবে আটকে দিল পুলিশ।’’ জাতীয় সড়ক অবরোধের অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘পুলিশের কয়েকটি গাড়ি রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। সে জন্যই যানজট হয়।’’ দুর্গাপুরের সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায়সরকার বলেন, ‘‘পুলিশ ও শাসকদল এখন এক হয়ে গিয়েছে। আমরা যে দাবিগুলি নিয়ে মিছিলের আয়োজন করেছিলাম, তার মধ্যে কিছু রাজ্যের বিরুদ্ধে, কিছু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। অথচ, পুলিশ আমাদের আটকে দিল!’’

সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁরা ১৫ দিন আগে রাজ্য পুলিশের কাছে চিঠি লিখে এই অভিযানের কথা জানান। পুলিশের তরফে লিখিত অনুমতি না পাঠালেও অভিযান বাতিলের নির্দেশও দেওয়া হয়নি। তাই অনুমতি রয়েছে ধরে নিয়ে তাঁরা কর্মসূচি আয়োজন করেছিলেন। সিপিএম নেতাদের দাবি, তাঁরা নিয়মমাফিক আবেদন করার পরে একাধিক বার পুলিশের সঙ্গে রুট নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু আচমকা বুধবার রাত থেকে মিছিল আটকানোর ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতা শুরু হয়। ডিওয়াইএফের রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বোগরাচটি, কালিপাহাড়ি, রানিগঞ্জ, আসানসোলের বিভিন্ন অঞ্চলেও আমাদের কর্মীদের কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।’’

ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেকবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘মোটরবাইক মিছিলের কোনও অনুমতি ছিল না। মিছিল আটকানোয় রাস্তায় বসে পড়েন অনেকে। তাই গ্রেফতার করা হয়।’’ এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাসেরও বক্তব্য, ‘‘এই কর্মসূচির অনুমতি ছিল না। তাই আটকানো হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement