উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর সঙ্গে পুলিশ সুপার-সহ আধিকারিকরা। — নিজস্ব চিত্র।
সিসিটিভি ফুটেজ সাফল্য এনে দিল। ৭২ ঘন্টার মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্য নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দুঃসাহসিক চুরির কিনারা করল পুলিশ। কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের একটি সোনার দোকানের শাটার ভেঙে ১৫ লক্ষ টাকারও বেশি সামগ্রী চুরি যায়। ২৫০ গ্রাম সোনার গয়না, সেই সঙ্গে রূপোর গয়না-সহ নগদ অর্থও লুট করে দুষ্কৃতীরা। তদন্তে নেমে সিসিটিভির সূত্র ধরে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চুরির ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করল পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র এবং প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার গয়না।
উত্তরপ্রদেশ থেকে এসে কম্বল বিক্রেতা বা রাজস্থানী কুলফিওয়ালা সেজে এলাকায় ঘুরে বেড়ানো। দিনের বেলায় ছদ্মবেশ ধরে চলত রেইকি। তার পর রাতের অন্ধকারে সোনা, রুপোর দোকানে হানা। অপারেশন চালিয়েই চম্পট। একের পর এক গয়নার দোকানে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনার কিনারা করতে নাজেহাল অবস্থা হচ্ছিল পুলিশের। অবশেষে সাফল্য কাটোয়া থানার পুলিশের। গ্রেফতার করা হল উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা ওই গ্যাংয়ের ৭ সদস্যকে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে দুই মহিলা। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র এবং প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার গহনা। জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘কাটোয়ার অগ্রদ্বীপে সোনার দোকানে চুরির ঘটনার পর তদন্তকারী একটি দল গঠন করা হয়েছিল। তারপর বিভিন্ন সোর্স মারফত খবর খবর নেওয়া হচ্ছিল। বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছিল। অবশেষে আমরা এই গ্যাংটিকে ধরেছি। এরা উত্তরপ্রদেশ থেকে এসে বিভিন্ন জিনিস ফেরি করার নাম করে বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে সোনার দোকানে চুরি করত।’’ পুলিশ সুপার আরও জানান, ধৃতদের কাছ থেকে চুরি করা গয়না এবং নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়াও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে দলের আরও কয়েক জনকে ধরা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী তিনি। পুলিশ সুপারের দাবি, ধৃতরা ‘বদায়ুঁ গ্যাং’-এর সদস্য।
পুলিশ সূত্রে খবর, কাটোয়া মিলপাড়া এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার রাতে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন মহিলা। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৪৫০ গ্রাম সোনার গয়না, নগদ ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, ১১টি মোবাইল ফোন, ৫টি দেশি পাইপগান, ৪০ রাউণ্ড গুলি, বেশ কিছু রূপোর গয়না। এ ছাড়া ধৃতদের কাছ থেকে ৬টি সাইকেল, শাবল, রড, করাত, জগ, হাতুরি, ছেনি ইত্যাদি চুরিতে ব্যবহৃত সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতদের শনিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন শুধুমাত্র কাটোয়া নয়, উত্তরপ্রদেশের এই গ্যাংটি পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার, পূর্বস্থলী, কেতুগ্রাম-সহ মুর্শিদাবাদ জেলাতেও সোনার দোকানে চুরির ঘটনায় জড়িত।