উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে। কার্যত এমন কান্ডের জেরে চার দিন জেল-হাজতে কাটাতে হল বছর সাতচল্লিশের হাফিজুর রহমানকে। মঙ্গলবার আদালতের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হতেই তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন সিজেএম রতনকুমার গুপ্ত। যাঁদের ‘গাফিলতি’র কারণে ওই ব্যক্তিকে জেলে কাটাতে হল, সেই দুই পুলিশ অফিসারকে আগামী মঙ্গলবার সশরীরে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
আইনজীবীরা জানান, শর্তাধীন জামিনে থাকা কেতুগ্রামের চাকটা গ্রামের ১৮ বছরের যুবক ডালিম শেখ আদালতের নির্দেশ মানছে না বলে পুলিশ আদালতে রিপোর্ট দিয়েছিল। তার ভিত্তিতে সিজেএম গত বছর ৯ অক্টোবর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পুলিশ ১১ জানুয়ারি চাকটা গ্রামের ডালিম শেখের বদলে কেতুগ্রাম থেকে হাফিজুরকে গ্রেফতার করে। ঘটনাচক্রে, হাফিজুরের ডাক নাম ডালিম। তাঁর আইনজীবী চন্দ্রনাথ তা আদালতে সেই তথ্য জানিয়ে দাবি করেন, পুলিশ যাকে খুঁজছে এবং যাঁকে গ্রেফতার করেছে— দু’জন আলাদা ব্যক্তি। পুলিশের গাফিলতির জন্যে হাফিজুর অন্যায্য ভাবে জেলে রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে মেমারি থানার পুলিশ জাতীয় সড়কের কানাইডাঙা সেতুর কাছ থেকে ডালিম শেখকে গ্রেফতার করে। কেতুগ্রামের চাকটা গ্রামের ওই যুবকের কাছে একটি পাইপগান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। বেশ কিছু দিন জেলে থাকার পরে সপ্তাহে দু’দিন তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজিরার শর্তে জামিন পায় ডালিম। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই সে আদালতের নির্দেশ অমান্য করতে থাকে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। এর পরেই তার বদলে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে হাফিজুরকে। তাঁকে কাটোয়া আদালত জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়ে মঙ্গলবার বর্ধমানে সিজেএমের আদালতে পেশ করতে বলেছিল।
সিজেএম এ দিন হাফিজুরকে জামিনে মুক্ত করেন। সেই সঙ্গে মেমারি থানার সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী অফিসার ও কেতুগ্রাম থানার এক এসআই-কে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশের কপি তদন্তকারী অফিসার ও কেতুগ্রাম থানার আইসি-কে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনাটি আমার জানা নেই। আদালতের নির্দেশ হাতে পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’