—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পরপর দু’টি ডাকাতি ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল আউশগ্রামে। ঘটনার প্রায় দু’মাস পরেও দুষ্কৃতী-চক্রের মাথারা এখনও অধরা। পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, দ্রুত তাদের ধরা হবে।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর আউশগ্রামের পলাশতলা এলাকায় অনিল দত্তের বাড়িতে ডাকাতি হয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই সপ্তাহ তিনেক পরে ছোড়া কলোনির বাসিন্দা পুলিশকর্মী সুশান্ত বিশ্বাসের বাড়িতে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। বাড়ির লোকজনের হাত-পা বেঁধে লুটতরাজ চালায় তারা। অপরাধের কিনারায় পুলিশ সুপার ১০ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম) গড়ে দেন। এ পর্যন্ত মোট সাত জনকে
ধরা হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার এগারো মাইলের বাসিন্দা রাজেশ ঢালি ও তন্ময় দাস। পুলিশের দাবি, ডাকাতি করে কেরলে পালিয়ে গিয়েছিল তারা। মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা করে তাদের হদিস মেলে। পুলিশের কাছে খবর আসে,
তারা রাজমিস্ত্রির কাজ করছে কেরলে। খবর পেয়ে কেরলে যান ত্রিদিব রাজ নামে ছোড়া ফাঁড়ির এক আধিকারিক-সহ চার পুলিশকর্মী। তাঁরা রাজমিস্ত্রি সেজে ওই দু’জনকে ধরেন। বুধবার ধৃতদের আউশগ্রামে আনা হয়। বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতে হাজির করানো
হয়ে বিচারক তাদের আট দিন পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশের দাবি, আগে যাদের ধরা হয়েছিল, তাদের জেরা করে জানা গিয়েছে, ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত উত্তর ২৪ পরগনার একটি দুষ্কৃতী-চক্র। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ‘‘ধৃতদের জেরা করে চক্রের বাকিদের সম্পর্কে নির্দিষ্ট সূত্র মেলেনি। ওই দুষ্কৃতীদের কোনও ছবিও ধৃতেরা দিতে পারেনি। ধৃতেরা দাবি করেছে, তাদের ছবি তুলতে দিত না চক্রের মাথারা। তারা কখনও কোনও স্টেশনে, কখনও মেলায় দেখা করতে বলত।’’
পুলিশের আর একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত করতে গিয়ে মেলা কয়েকটি মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা করে চক্রের মাথাদের সন্ধানে উত্তর ২৪ পরগনার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। কিন্তু গিয়ে দেখা যায়, মোবাইলগুলি কোনও মুদিখানা দোকানের বা সেলুনের। অনেকেই সেই নম্বর ব্যবহার করে ফোন করেন। ডাকাত দলের পান্ডারা নিজেদের মোবাইলের পরিবর্তে অন্য মোবাইল থেকে ফোন করে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল।
পুলিশ আধিকারিকদের একাংশ এ-ও মনে করছেন, দুষ্কৃতীরা বাংলাদেশেও চলে গিয়ে থাকতে পারে। তদন্তের সঙ্গে যুক্ত পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “তদন্তের কাজে অনেক দূর এগোনো গিয়েছে। বাকিদেরও ধরা হবে।”