Durgapur

ধুলো-ঝড়ে ঢাকছে হ্যানিম্যান সরণি, ভোগান্তি দুর্গাপুরে

রেলগেট পার করে গ্যামন ব্রিজের দিকের রাস্তায় মোটরবাইক নিয়ে গেলেই নজরে পড়ে, অঙ্গদপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে গ্যাসের সিলিন্ডারবাহী গাড়ি চলাচল করছে।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ০২:২১
Share:

ধুলোর মধ্যেই চলে যাতায়াত। ছবি: বিকাশ মশান

শহরের গতি থমকে যায় মায়াবাজার রেলগেটে। কিন্তু সেখানে উড়ালপুলের অভাবই হ্যানিম্যান সরণির একমাত্র সমস্যা নয় বলে দাবি দুর্গাপুরের বাসিন্দাদের একাংশের। তাঁদের মতে, ধুলো-ঝড়, লেন ভেঙে যাতায়াত-সহ বিভিন্ন কারণে এই রাস্তার বিপত্তি বাড়ছে।

Advertisement

বাসিন্দারা জানান, রেলগেট পার করে গ্যামন ব্রিজের দিকের রাস্তায় মোটরবাইক নিয়ে গেলেই নজরে পড়ে, অঙ্গদপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে গ্যাসের সিলিন্ডারবাহী গাড়ি চলাচল করছে। এর জেরে, এলাকা ঢাকে ধুলো-ঝড়ে! তা ছাড়া, ওই এলাকা থেকে কিছুটা এগোতেই রাস্তার পাশে রয়েছে একটি বেসরকারি কারখানার গেট। সেখানে গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য রাস্তার দু’দিকে অস্থায়ী রেলিং রাখা থাকে। কারখানার গেটের সামনে রাস্তায় জমে রয়েছে ধুলো। তাই, সেখানেও যানবাহন গেলে ধুলো ওড়ে। পুরষার বাসিন্দা, পেশায় আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতিদিন মোটরবাইকে চড়ে সিটি সেন্টার যাই। পথে এমনও অবস্থা হয় যে, ধুলোর জন্য কিছু দেখতে পাচ্ছি না।’’

ওই এলাকা থেকে কিছুটা গেলেই সামনে বাঁক। গাড়ি, মোটরবাইকের গতিতে ফের ধাক্কা। কিছুটা এগিয়ে হেড কোয়ার্টার বাজার। ডান দিকে রাস্তা নেমে গিয়েছে হুচুকডাঙার দিকে। বাজার শেষ হতেই শিল্পতালুকের রাস্তার সংযোগস্থল। ফের ধুলো-ঝড়। এর পরে ডিসিএল মোড়। ডিসিএল কারখানার গেটের পাঁচিল শেষ হতেই আবার বড় বাঁক। কিছুটা এগোতেই একটি বেসরকারি কারখানার গেট। রাস্তার উপরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক, ডাম্পার। এই পরিস্থিতিতে দৃশ্যমানতার সমস্যার কথা জানান ট্রাক চালক মহম্মদ আশরাফ। গেটের কাছেই আবার রয়েছে একটি কালভার্ট। ভারী গাড়ির যাতায়াতে কালভার্ট থেকে রাস্তা বেশ কিছুটা নিচু হয়ে গিয়েছে। ফলে, অত্যন্ত ধীরে গাড়ি, মোটরবাইক না চালালে উল্টে যাওয়াটাও ভবিতব্য! তা ছাড়া এখানেও জমে থাকে ধুলোর স্তর।

Advertisement

এই এলাকা থেকে কিছুটা গেলেই সামনে রাতুড়িয়া হাউজ়িং কলোনি। সেখানেও বাঁকের মুখে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক, জানান শহরবাসী। তামলা ক্যানালের সেতু পেরোতে আবার সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক, ডাম্পার। গ্যামনব্রিজ আসার আগে টোল প্লাজ়া। রাস্তায় খন্দ। টোল প্লাজ়া পেরোনোর পরে, কিছুটা পেরোতে অনেকটা জায়গা জুড়ে রাস্তা খারাপ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উল্টো দিক থেকে আসা ট্রাক ভাঙা অংশ এড়াতে অহরহ লেন ভাঙে। সাবধান না হলে বিপদ হতে পারে প্রতি মুহূর্তে। তা ছাড়া ডাম্পারে বোঝাই আ-ঢাকা সামগ্রী থেকে উড়ে যাওয়া ধুলো প্রতি মুহূর্তে উড়ে এসে চোখে, মুখে পড়াও সাধারণ বিষয় জানান মোটরবাইক আরোহী সুকুমার মণ্ডল, পরিমল মণ্ডলেরা।

রাস্তার এমন পরিস্থিতিতে বাড়ছে দুর্ঘটনাও। ২০১৮-র ২ জুলাই রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ডাম্পার আচমকা গড়িয়ে গিয়ে পিষে দেয় দাঁড়িয়ে থাকা একটি স্কুটিকে। স্কুটির আরোহী অন্যত্র থাকায় বরাত জোরে বেঁচে যান। গ্যামন ব্রিজ এলাকায় রাস্তার একদিকে নতুনপল্লি। পানীয় জল সংগ্রহ করার জন্য তাঁদের রাস্তা পারাপার করে অন্য দিকে যেতে হয়। রাস্তাজুড়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকায় সমস্যা হয়। তা ছাড়া, আড়াল হয়ে যাওয়ায় দ্রুতগতির যানবাহন নজরে আসে না। যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। রাস্তার অধিকাংশ ফুটপাতও দখল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এর ফলে, পথচারীদের পাশাপাশি, প্রাতঃভ্রমণকারীদের চরম সমস্যায় পড়তে হয়।

তবে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, ‘‘রাস্তা জুড়ে এ ভাবে ট্রাক দাঁড় করানো যাবে না। পুরসভা কারখানাগুলির সঙ্গে কথা বলবে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা দাবি করেছেন, মাঝেমধ্যেই অভিযান হয়। পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। আগের থেকে এলাকার পরিস্থিতি ভাল। ফের অভিযান চালানোর আশ্বাসও দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement