পাশের বাড়িতে দুষ্কর্ম, থমথমে পাড়া

গভীর রাত। ঘুমিয়ে সারাপাড়া। আচমকা ভারী গলার আওয়াজে ঘুম ভাঙল বাসিন্দাদের। জানলা ফাঁক দিয়ে দেখা গেল, পাড়ারই একটি বাড়ি ঘিরে ধরে অভিযান চালাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০৮
Share:

বাড়ি: এখানেই আটকে রাখা হয় অপহৃত ব্যবসায়ীকে। নিজস্ব চিত্র

গভীর রাত। ঘুমিয়ে সারাপাড়া। আচমকা ভারী গলার আওয়াজে ঘুম ভাঙল বাসিন্দাদের। জানলা ফাঁক দিয়ে দেখা গেল, পাড়ারই একটি বাড়ি ঘিরে ধরে অভিযান চালাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। বুধবার গভীর রাতে ওই অভিযানে উদ্ধার করা হয় ভিন্ রাজ্যের অপহৃত এক পরিবহণ ব্যবসায়ীকে। ওই ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পরে, শুক্রবার সকালেও আতঙ্কের রেশ কাটেনি হিরাপুরের নিমতলা লাগোয়া সাঁতাডাঙাল এলাকায়। অপহরণের ঘটনায় জড়িতদের এলাকায় দেখাও যাচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

Advertisement

সাঁতাডাঙালের একটি ফাঁকা বাড়িতে এক সপ্তাহ ধরে রাখা হয় ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা, পরিবহণ ব্যবসায়ী স্বপন দাসকে। বুধবার তাঁকে উদ্ধার করে হিরাপুর ও ঝাড়়খণ্ডের জরমান্ডি থানার পুলিশ।

পুলিশের দাবি, এই অপহরণের ঘটনায় সাত জন জড়িত রয়েছে। ইতিমধ্যেই বাবুল সোপান নামে হিরাপুরেরই ধ্রুবডাঙাল এলাকার এক বাসিন্দা এবং উত্তরপ্রদেশের সিদ্ধার্থনগরের নিশার আহমেদ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি পাঁচ জনের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানায়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে বার্নপুরের বাসিন্দা নাটকা সেলিম ও তার ভাইপো রেহান, শ্যামবাঁধের রবি শাহ। পুলিশের দাবি, তারা সবাই পলাতক। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দার দাবি, শুক্রবার সকালেও এলাকায় নাটকা সেলিম ও ওই বাড়ির মালিক ইরফান খানকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বিষয়টি নিয়ে অধিকাংশ বাসিন্দাই মুখ খুলতে নারাজ। কয়েক জন বাসিন্দার অবশ্য দাবি, প্রায় ২৫ বছরের পুরনো ওই বাড়িতে কখওনই খুব একটা বেশি লোকের দেখা মেলেনি। তবে মাস খানেক ধরে ওই বাড়িতে নিয়মিত কয়েক জন অপরিচিত লোক জনের যাতায়াত বেড়ে গিয়েছিল।

সম্প্রতি চার-পাঁচ জন অপরিচিত যুবক ওই বাড়িতে নিয়মিত থাকছিলেন। তবে তাঁরা বাড়ির বাইরে খুব একটা পা দিতেন না। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও খুব একটা মেলামেশা করতেন না ওই যুবকেরা। বাসিন্দাদের আরও দাবি, ওই বাড়ি থেকে মাঝরাতে অনেক সময়ে কোনও যন্ত্রের ‘ঘড়ঘড়’ আওয়াজ পাওয়া যেত। তবে বিষয়টি নিয়ে কেউ গা না করেননি বলে বাসিন্দারা জানান। তবে কী ভাবে জনবহুল এলাকায় এমন দুষ্কর্ম চালানো হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। একাধিক বাসিন্দার আশঙ্কা, ‘‘ঘরের পাশে যদি এমন কাণ্ড হয়, তা হলে নিশ্চিন্তে পাড়ায় থাকব কী করে!’’

নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের যদিও দাবি, নির্দিষ্ট সময় অন্তর টহল চলছে এলাকায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement